মৃত্যুর আগে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান আমজাদ

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-26 01:50:47

জীবনের মায়া ত্যাগ করে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নিলেও আজও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের চকগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন। কিন্তু মৃত্যু আগে স্বীকৃতি পেতে তিনি দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে আমজাদ হোসেন ছিলেন টগবগে যুবক। সেই সময় দেশকে স্বাধীন করার নেশায় জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে অংশ নেন লাখ লাখ যুবক। আমজাদ হোসেনও তাদের মধ্যে একজন। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ৭৭ বছর। কিন্তু দরিদ্রতার কষাঘাতে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে তাকে।

আমজাদ হোসেনের যুদ্ধকালীন জীবন বৃত্তান্ত সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১১নং সেক্টরের কমান্ডার আলতাফ হোসেন ও মনছুর আলীর অধীনে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ চলাকলীন সময় মাদারগঞ্জ-মীরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন তিনি।

আমজাদ হোসেন যুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করলেও, আজ জীবন যুদ্ধে তিনি পরাজিত সৈনিক। দেশ স্বাধীনের ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা বা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি।

আমজাদ হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি বাংকার খনন ও রান্না করে মুক্তিবাহীনির খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। স্থানীয় কবিরাজের বাড়ির পশ্চিমে একটি বাঁশঝাড়ের নিচে ২ নং বাংকার খনন করা হয়। এছাড়া সাদুল্লাপুর-বড় দড়গাহ রাস্তার পশ্চিম স্থানে হানাদার বাহীনির চলাচল রোধ করতে রাস্তা কেটেছিলাম।’

এদিকে, ওই যুদ্ধে সফলভাবে অংশগ্রহণ করায় তৎকালীন সেক্টর কমান্ডার আমজাদ হোসেনকে একটি সনদপত্র দেন। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর আমজাদ হোসেনের বাড়িতে আগুন লেগে সনদপত্রটি পুড়ে যায়। পরবর্তীতে সাদুল্লাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড মেছের উদ্দিন সরকারি এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবু তালেব মিয়া স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয় তাকে। এসব প্রত্যয়নপত্র নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘুরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি আমজাদ হোসেন।

বর্তমানে এই মহাযোদ্ধা তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দুর্বীসহ জীবনযাপন করছেন। তাই শেষ বয়সে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে চান তিনি।

স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুর জলিল আজমী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমজাদ হোসেনকে নিয়ে আমি বিভিন্ন স্থানে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করেছিলাম। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার স্বীকৃতি না পাওয়া খুবই দুঃখজনক।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর