বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত রোহিঙ্গার নাম আব্দুল মজিদ (৩৪)।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে সীমান্তে এই মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্তের ২৮-২৯ সীমান্ত পিলার এলাকার শূন্য রেখায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরিত হয়ে এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সে কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প ডি-১ এ অবস্থানরত আবদুল মালেকের পুত্র।
খবর পেয়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিজিবির সহায়তায় পুলিশ সীমান্তের থোয়াইঙ্গাঝিরি থেকে রোহিঙ্গার মরদেহটি উদ্ধার করেছে। মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা যুবকের দুটি পায়ের নীচের অংশ উড়ে গেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, ‘কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন সময়ে শূন্য রেখা দিয়ে গোপনে যাওয়া আসা করে। সীমান্ত দিয়ে নিষিদ্ধ ইয়াবা’সহ পণ্য সামগ্রী আনা-নেওয়ার কাজে জড়িত রোহিঙ্গারা। কিন্তু সীমান্তে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে প্রায় মারা যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এমনকি শূন্য রেখায় পশু বিচরণ করাতে গিয়ে এবং শুকনো কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে মারা যাচ্ছে বাংলাদেশিরাও।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বাইশফাঁড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বিজিবি-পুলিশের সদস্যরা।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৩৪ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ জানান, সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে ঘটনাস্থলের অপরপ্রান্তে অবস্থানরত মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে শূন্য রেখায় মাইন বিস্ফোরণের বিষয়টি মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অস্বীকার করেছে। বিজিবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
প্রসঙ্গত: চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আরও ১ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছিল। এ পর্যন্ত বান্দরবান সীমান্তের চারটি পয়েন্টে মাইন বিস্ফোরণে একজন বাংলাদেশিসহ এ পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২০ জনের বেশি। সীমান্তের অন্তত ৯টি পয়েন্টের শূন্য রেখায় এবং কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে স্থলমাইন পুঁতে রেখেছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা।