বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২০ সালের বরাদ্দকৃত বিনামূল্যের বই নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বই বিতরণ ও সংরক্ষণ কমিটি। বই সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো গুদাম না থাকার কারণে বই বিতরণের অনেক আগেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে বই তুলে দিতে হচ্ছে তাদের।
আর নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে বই বিতরণ করার ফলে বই নষ্ট বা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের দাবি সরকার যেন উপজেলাতে বই সংরক্ষণের জন্য একটি গুদাম নির্মাণ করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরকার বিনামূল্যে বই বিতরণের লক্ষে এরই মধ্যে বালিয়াকান্দিতে বই পাঠানো শুরু করেছে। কিন্তু বালিয়াকান্দি উপজেলাতে বই সংরক্ষণের জন্য কোনো গুদাম না থাকার কারণে বই বিতরণ ও সংরক্ষণ উপজেলা কমিটি বই রাখার জন্য আপাতত সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি কক্ষ ব্যবহার করছে। আর কক্ষটি পূর্ণ হয়ে গেলেই কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিনামূল্যের বইগুলো প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২৪) সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বালিয়াকান্দি সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান। এ সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়ছারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো: মেয়াদ হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বালিয়াকান্দিতে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল রয়েছে ৩০টি আর মাদ্রাসা রয়েছে ১২টি । মোট ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩০০টি বই বালিয়াকান্দির জন্য বরাদ্দ রয়েছে। এতো বই সংরক্ষণের জন্য আমাদের কোনো জায়গা নেই। সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের যে কক্ষটি আমরা ব্যবহার করছি সেটিতে ১০ থেকে ১৫ হাজার বই রাখা সম্ভব। তাই আমরা কক্ষটি ভরে গেলেই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ডেকে আগেই তাদের বই বুঝিয়ে দিচ্ছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়ছার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, মূলত ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যের নতুন বই হাতে পাবে। নির্দিষ্ট সময়ে যাতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে সেই লক্ষে সরকার এরই মধ্যে প্রতিটি উপজেলাতে বই পাঠানো শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের বালিয়াকান্দিতে বই সংরক্ষণের জন্য কোনো গুদাম না থাকায় আমরা আগেই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে তাদের বিদ্যালয়ের বই তুলে দিচ্ছি। এত আগে বিদ্যালয়ে বই পাঠিয়ে দিলে কিছু ঝুঁকিও থাকে।
উপজেলা বই বিতরণ ও সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, এটা একটা বড় ধরণের সমস্যা। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারের বিনামূল্যের এতোগুলো বই রাখার জন্য এখানে কোন গোডাউন নেই। আমি এখানকার পুরনো ভবনটি ভেঙে সেখানে একটি গোডাউন তৈরির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সুপারিশ পাঠাবো।