পরিচ্ছন্নকর্মীর বেতন তোলেন প্রধান শিক্ষক!

কুড়িগ্রাম, দেশের খবর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কুড়িগ্রাম | 2023-07-28 05:55:21

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অসুস্থ পরিচ্ছন্ন কর্মীর হাতের টিপ সই নিয়ে পুরো চেক বই নিজের কাছে রেখে মাসের পর মাস তার বেতন তুলে নিচ্ছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এমনটাই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিচ্ছন্ন কর্মীর মেয়ে রেখা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের উত্তর পশ্চিম কোণে একটি জায়গায় ঘর করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করেন বিদ্যালয়টির পরিচ্ছন্ন কর্মী শ্রী প্রতাপ। প্রায় দুই বছর ধরে অসুস্থ তিনি। প্যারালাইজড হওয়ার কারণে ভালোভাবে কথাও বলতে পারেন না। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তাকে নিয়মিত বেতন দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রতাপের কন্যা রেখা। এমনকি গত দেড় বছর ধরে প্রতাপের বেতনের চেক বইয়ে টিপ সই নিয়ে নিজের কাছে রেখে বেতন তুলে নিচ্ছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার।

রেখা জানান, প্রতাপ নিয়মিত কাজ করতে না পারায় তার ছোট খালা বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। সাথে প্রতাপের ছেলে ও ছেলের বৌ মাঝে মাঝে তার পরিবর্তে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু মাস শেষে প্রতাপের বেতন তুলে নেন প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার। বিনিময়ে প্রতাপের বোনকে মাসে দুই হাজার টাকা দেওয়া হলেও প্রতাপ কিংবা ছেলে ও ছেলের বৌকে কোনো টাকা দেওয়া হয়না। প্রায় দেড় বছর ধরে এমনটাই করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

রেখা আরো বলেন, "দেড় বছর থেকে আমাদেরকে কোনও বেতন দেয়না। এর মধ্যে একবার বেতন ৪৫ হাজার টাকা তুলে আমাদেরকে মাত্র ১৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। গত ঈদে সবার সাথে আমাদের বেতন বোনাস হলেও হেড স্যার কোনও টাকা দেন নাই।"

এর আগে প্রতাপের টিপসইকৃত চেক বই অনেকবার ফেরত চাওয়া হয়। না পেয়ে অবশেষে লিখিত আবেদন করলে গত সপ্তাহ আগে উৎপল কান্তি সরকার চেকবই ফেরত দেন বলে জানান প্রতাপের মেয়ে।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের সাথে দেখা করতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, "আমি মিটিংয়ে বাইরে আছি। আমার সাথে দেখা হবে না। নিউজ করেন আমি পরে বিষয়টি দেখবো। এই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।"

এদিকে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি খোরশেদ আলম চাঁদ বলেন, 'আমি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতাপের পরিবার আমাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষককে বলে প্রতাপের চেকবই ফেরতের ব্যবস্থা করেছি। বাকি অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর