ময়মনসিংহের গৌরীপুর-শ্যামগঞ্জ সড়কটির বর্তমানে বেহাল দশা। অভিযোগ আছে, ১৬ মাস আগে সড়কটি সংস্কার করা হলেও ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, আবার কোথাও সড়ক দেবে ভেঙে গেছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে ডোবায় পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংস্কারের সময় নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার ও সংশ্লিষ্ট দফতরের সঠিক নজরদারির অভাবে সড়কের এই বেহাল দশা হয়েছে। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায় সড়ক। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালক ও পথচারীদের।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পল্লী সড়ক ও কালভার্ট মেরামত কর্মসূচির অধীনে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শ্যামগঞ্জ জিসি সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয়। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় করা হয় ২ কোটি ৭৭ লাখ ৯৯ হাজার ৪৫৪ টাকা। প্রকল্পের তদারকি কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কেকে এন্টারপ্রাইজ। ২০১৮ সালের ৭ মে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়।
এলাকাবাসী জানান, সড়ক সংস্কার কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংস্কার কাজে নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার ও কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এসব অনিয়ম চাপা পড়ে। তাই সড়কের এই বেহাল দশা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাউরাট এলাকায় সড়কের পিচ উঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সড়কের অংশ ভেঙে পড়ছে। সড়কে চলাচল করতে গিয়ে নোংরা পানিতে নষ্ট হচ্ছে পথচারীর জামাকাপড়। গর্তে চাকা পড়ে আটকে যাচ্ছে বাস, ট্রাক, ইজিবাইক, অটোরিকশা, হ্যান্ডট্রলি, পাওয়ার ট্রিলারসহ অন্যান্য যানবাহন।
অপরদিকে, সড়কের কাউরাট মোড়, পশ্চিমকাউরাট, গাভীশিমুল, ইটখলা এলাকায় ৩০টির বেশি স্থানে রাস্তা দেবে গেছে। কিছু স্থানে ধসে পড়ছে সড়কের অংশ। নির্মাণ কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। সংস্কারের সময় সড়কের দু’পাশ প্রশস্ত করা হলেও ঠিকমতো মাটি ভরাট না করায় সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এদিকে, সড়কের প্রবেশপথে সাইনবোর্ড টানিয়ে ১০ টনের বেশি ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দূর্গাপুর থেকে বালু ও পাথর বোঝাই ভারী যানবাহন নিয়মিত এই সড়কে চলাচল করছে। ফলে বেহাল সড়কটির অবস্থা আরও বেহাল হয়ে যাচ্ছে।
গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ফকির জানান, সাধারণ মানুষের কল্যাণে সুপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন। একই সড়ক কেন বারবার ভাঙছে, তা নিরুপণ করে প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ সড়ক সংস্কার ও মেরামত করতে হবে। যদি কেউ অনিয়মে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবু সালেহ মো. ওয়াহেদুল হক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের ত্রুটি মেরামত করার উদ্যোগ নিয়েছে।’