চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন প্রধান মেম্বারকে হত্যার দায়ে ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মতলব উত্তর উপজেলার কোয়রকান্দি এলাকার আব্দুল কাদির ফকিরের ছেলে আবুল কালাম (৫০), মো. বাবুল (৪২), মো. খোকন (৪৫) ও কিশোরগঞ্জ জেলার কাটিয়াদী থানার আশুরকান্দা এলাকার ফল্লু মিয়ার ছেলে মো. লিটন (১৯)।
মামলার বিবরণ থেকে জানাযায়, ২০১৫ সালের ৫ জুলাই রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে নিহত আব্দুল মতিন প্রধান নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সুজাতপুর বাজার থেকে একজন অপরিচিত কাপড় ব্যবসায়ীকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য সুজাতপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সুজাতপুর হতে দাসের বাজার সংযোগ ঘোড়াইর কান্দি গ্রামের জনৈক সফিকুল ইসলামের বাড়ির আনুমানিক ৭শ’ গজ দক্ষিণ এসে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে রাস্তার ওপর ফেলে রেখে যায়।
পরে স্থানীয়রা পড়ে থাকতে দেখে তার পকেটে থাকা মোবাইল থেকে নম্বর নিয়ে তার ছেলেকে সংবাদ দিলে সেখান থেকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তিনি চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এই ঘটনায় নিহতের মেয়ে নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই উল্লেখিতদের অভিযুক্ত করে মতলব উত্তর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতলব উত্তর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
মামলার বাদী নাছিমা বেগম বলেন, আমার পিতা ও আসামিরা সম্পর্কে মামা-ভাগিনা। তাদের সম্পত্তি গত সমস্যা নিয়ে আমার পিতা সালিশি বৈঠকে একটি রায় দেন। ওই রায় তাদের পক্ষে না হওয়ায় বিরোধ দেখা দেয়। তারপর থেকেই তারা পরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে হত্যা করে।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আমান উল্লাহ বলেন, আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় পড়ে শুনানো হয়। দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে এই রায় দেন।
সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার হোসেন অভি এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন তবদিল হোসেন।