চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নতুন করে আরও ৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম জানান, পদ্মায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ০.৫৬ সেন্টিমিটার (বিপদসীমা ২২.৫০ সেমি) এবং মহানন্দায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ০.৫৮ সেন্টিমিটার (বিপদসীমা ২১ সেমি) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলার আলাতুলি, নারায়নপুর, চর অনুপনগর, শাহজাহানপুর ও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের নিম্মাঞ্চলে নতুন করে পানি প্রবেশ করেছে। এই ৫ ইউনিয়নের ২ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, দুর্লভপুর, মনাকষা, উজিরপুর, ধাইনগর, ঘোড়াপাখিয়া ও ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
চরবাগডাঙ্গা ইউপি’র ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মো. কামরুজ্জামান টুটুল জানান, গোঠাপাড়া, বাগানপাড়া, চাকপাড়া, গিধনিপাড়া, মালবাগডাঙ্গা গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চরবাগডাঙ্গা বিওপি এলাকার গিধনিপাড়ায়ও নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
শাহজাহানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম জানান, হাকিমপুর, সেকালিপুর রাবনপাড়া, দুর্লভপুর ও নরেন্দ্রপুরের কিছু অংশ নিম্নাঞ্চল। সে কারণে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪’শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো রান্না করতে পারছে না।
চর অনুপনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাদেকুল ইসলাম জানান, নতুনপাড়া, বিশ্বাসপাড়া, লম্বাপাড়া, মোন্নাপাড়া, চর অনুপনগর বাগানপাড়া, কলাবাগান ও চরকাশেমপুর ক্যানেলপাড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, পাঁকা, দুর্লভপুর, মনাকষা, উজিরপুর, ধাইনগর, ঘোড়াপাখিয়া ও ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পরিবারগুলোর ত্রাণের জন্য চাহিদাপত্র জেলা প্রশাসনের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হুদা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ মি.মি. বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। নিমাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর মাসকলাই তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ৫৮০ হেক্টর সবজি ও ৭০ হেক্টর হলুদ নষ্ট হয়ে গেছে।'
এদিকে, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলমগীর হোসেন জানান, আলাতুলি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ৫০০ পানিবন্দি পরিবারের মাঝে ৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। নারায়নপুর ইউনিয়নে ৪০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে শুকনো খাবারের জন্য চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে।