অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহীর গোদাগাড়ী শাখা থেকে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতারণা করে ছয় লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন তৎকালীন ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব। টাকা তুলে নেওয়ার প্রায় চার মাস পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি বুঝতে পারেন গ্রাহক সাবের আলী। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার ছেলের মাধ্যমে ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক সাবের আলী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দাড়িয়াপুর হাতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আহসান হাবিব বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত।
এদিকে, গ্রাহকের অভিযোগ আমলে নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছেন অগ্রণী ব্যাংকের গোদাগাড়ী শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক শিব শঙ্কর। বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সত্যতাও পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
লিখিত অভিযোগে সাবের আলী উল্লেখ করেছেন, ১৯৮৯ সালে সাবের আলী অগ্রণী ব্যাংকে গ্রাহক হয়ে লেনদেন শুরু করেন। তার হিসাব নম্বর (০২০০০০৯৫৭৭৫৯৪)। তিনি ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন এবং ব্যাংক থেকে লোনও নেন। সেই লোনের সুদের টাকা সমন্বয় করার কথা বলে চলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকে অগ্রণী ব্যাংকের গোদাগাড়ী শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব ব্যাংকের পিয়ন আফজালের মাধ্যমে সাবের আলীর চেক বই থেকে ‘৪৩০৮১৭২’ নম্বরের একটি ফাঁকা পাতা নেন। সেটি ১৬ জুন ২০১৯ তারিখে ব্যবহার করে ওই হিসাব নম্বর থেকে ৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। চেকের পাতাটিতে সে সময়ের ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব নয়ন নিজেই টাকার পরিমাণ লিখেছেন।
জানতে চাইলে সাবের আলী বলেন, তিনি ব্যাংকে লেনদেন করলেও বিষয়গুলো কম বুঝেন। তার লোনের সুদের টাকা তার সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর থেকে নিয়ে ব্যবস্থাপক আহসান হাবিবকে ‘রি-নিউ’ করে দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। সেজন্য তিনি ফাঁকা চেকের একটি পাতা দিয়ে চলে যেতে বলেন। বিশ্বাস করে আমি সেটা দিয়ে আসি। এখন শুনছি আমার সঞ্চয়ী হিসাবের ৬ লাখ টাকা নেই!
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোদাগাড়ী শাখা অগ্রণী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপক শিব শঙ্কর বলেন, ‘গ্রাহকের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টির অনুসন্ধান শুরু করি। তাতে উঠে এসেছে- পিয়ন আফজাল চেকের পাতাটি নিয়ে এসে আহসান হাবিবকে দেন। আহসান হাবিব নিজেই ওই চেকে টাকার পরিমাণ লিখে টাকা তুলেছেন। সেই টাকা তিনি কী করেছেন, তার কোনো হদিস নেই। সেজন্য গ্রাহকের অভিযোগ ও অনুসন্ধানের প্রাপ্ত তথ্য লিপিবদ্ধ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব বলেন, আমি কারও কাছ থেকে ফাঁকা চেকের পাতা নেয়নি। সাবের আলীর অ্যাকাউন্টের টাকাও তুলি নি। ঘটনার চার মাস পর আমি যখন অন্য শাখায় কর্মরত, তখন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দেওয়ার পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে বলে মনে করি।