পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কবীর মাহমুদ। মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্টরা সচেষ্ট রয়েছেন।’
পাবনার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অফিসের দাবী, উজান থেকে প্রবল বেগে স্রোত আসায় পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।
পাউবোর পাবনা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পদ্মায় প্রবল স্রোতে নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৫শ’ হেক্টর ফসলি ও নিচু জমি প্লাবিত হয়েছে। এত অনেক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাবনার পাউবো অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সানজানা নাজ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীস্থ পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে গত সোমবার সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার। প্রতিদিনই পদ্মার বিভিন্ন পয়েন্টে ৫/৬ সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় পদ্মায় পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে।’
স্থানীয় সাঁড়া ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান রানা সরদার জানান, পদ্মায় এবার যেভাবে পানি বাড়ছে, তা আগে কখনও বাড়েনি। কোমরপুর থেকে সাঁড়াঘাট পর্যন্ত বন্যা রক্ষা বাঁধের তিন থেকে চার ফুট নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস জানান, তার ইউনিয়নের রূপপুর সড়কের নিচু অংশে ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই পাকশীর বিভিন্ন স্থানে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও বসতভিটার ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘উপজেলার সাঁড়া, পাকশী ও লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের আখ, ফুলকপি, গাজর, মাষকলাই, মূলা, বেগুন, শিম, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধানসহ ৪০০ হেক্টর জমির সবজি ও ফসল তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে লক্ষীকুন্ডার দাদাপুর, চরকুরুলিয়া, কামালপুর ও বিলকেদায়। মাঠপর্যায়ে প্রাথমিক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে। তবে পানি কমে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা যাচ্ছে না।’
পাবনার পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘যে গতিতে পানি বাড়ছে, তাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিপদসীমা অতিক্র করবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। পদ্মার গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলোতে সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।’