চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নতুনভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার চরমোহনপুর ও নামোশংকরবাটি বড়িপাড়া ও জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পরিবারগুলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত পদ্মার পানি বিপদসীমার ২২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার ও মহানন্দা ২১ মিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে।
দীর্ঘদিন পানিবন্দি থাকায় ত্রাণের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে সাধারণ মানুষ। পাকা ইউনিয়নের তেরশিয়া গ্রামের আবু মড়ল জানান, প্রায় ১৫ দিন ধরে তার পরিবার পানিবন্দি। ঘরে যা মজুদ খাবার ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। কাজ না থাকায় সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কিছুদিন এলাকাতে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। বেছে বেছে কিছু মানুষকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। যারা আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত তাদের কেউ খবর রাখেনি।
একই অভিযোগ করে নিশি পাড়া গ্রামের মরিয়ম বেওয়া বলেন, বন্যার পানিতে শাক-সবজিসহ সব ফসল ডুবে গেছে। বাড়িতে উপার্জনক্ষম কোনো মানুষ না থাকায় অর্থের অভাবে সংসার চালাতে পারছিনা। একটি মাত্র ছাগল ছিল-সেটিও পানিতে ডুবে মারা গেছে। ভাগ্যে জোটেনি সরকারি চাল বা শুকনো কোন খাবার।
শিবগঞ্জ আসনের এমপি ডা.সামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুল জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। সরকারিভাবে যে তালিকা করে ত্রাণ দেয়া হয়েছে তা একেবারেই অপ্রতুল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে বন্যা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, নতুন করে পৌর এলাকার চরমোহনপুর ও নামোশংকরবাটি বড়িপাড়ার ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম তাজকির-উজ-জামান জানান, বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।