মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সারাদেশে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস। তবে দেশের প্রবীণরা, বিশেষ করে যারা গ্রামে বসবাস করেন, কতটুকু সুযোগ-সুবিধা পান সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। দেশের আর দশজন প্রবীণের মতো পঞ্চগড়ের মমেনা খাতুনও একজন। তবে জীবিকার তাগিদে তাকে বাজারে শাক বিক্রি করতে হয়। অথচ এই বয়সে নাতি নাতনির সঙ্গে খুনসুটি করে সময় কাটানোর কথা ছিল তার। কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি।
জানা গেছে, মমেনা খাতুন পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের টেঙ্গনমারী এলাকার মৃত আফজাল হোসেনের স্ত্রী। আপনজন বলতে একমাত্র মেয়ে। স্বামী আফজাল হোসেন ছিলেন দিনমজুর। দীর্ঘদিন প্যারালাইসিসে ভুগে দু’বছর আগে মারা যান তিনি। এরপর সংসারের হাল ধরতে সারাদিন এলাকার বিভিন্ন বনে-জঙ্গলে ঢেঁকিশাক খুঁজে বেড়ান মমেনা। আর বিকাল হলেই পঞ্চগড় বাজারে শাক বিক্রি করতে দেখা যায় তাকে। বিক্রির টাকা দিয়েই চলে তার একার সংসার।
মমেনা খাতুন জানান, তার একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ফলে তিনি এখন একাই থাকেন। তবে কোনো ভারী কাজ করতে পারেন না। তাই বেঁচে থাকার জন্য শাক বিক্রি করেন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে আসছেন। প্রতি আঁটি শাক ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
তিনি আরও জানান, শাক বিক্রি করে কোনোরকম দুই বেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করা গেলেও চিকিৎসার সামর্থ্য তার নেই। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে রোগও বাড়ছে। ফলে অসুস্থ হলে অন্যের সহযোগিতার ওপর নির্ভর করতে হয় তাকে। এজন্য সরকারের কাছে তিনি বিধবা বা বয়স্ক ভাতার দাবি জানান।
শাক ক্রেতা জমির উদ্দিন জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মমেনাকে বাজারে শাক বিক্রি করতে দেখছেন। তিনি নিজেও তার কাছ থেকে নিয়মিত শাক কেনেন।
পঞ্চগড়বাসী নামে একটি সামাজিক সংগঠনের সংগঠক আরিফ হোসেন জানান, সমাজের কোনো বিত্তবান বা সরকার যদি মমেনার দিকে সুদৃষ্টি দেয় তাহলে তিনি অনেক উপকৃত হতেন।
এ বিষয়ে আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) পঞ্চগড় জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুজ্জামান রেজা জানান, সরকারি সহায়তা পেলে বৃদ্ধ বয়সে মমেনার জীবন একটু সহজ হত।