স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ না নেওয়ায় রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে কলেজছাত্রী লিজা রহমানের (১৯) আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনসহ (১৯) তিনজনকে আসামি করা হয়।
বুধবার (০২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে লিজার বাবা মো. আলম বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে নগরীর শাহ মখদুম থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর শাহ মখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, লিজার বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন, শ্বশুর মাহবুবুল হক খোকন, শ্বাশুড়ী নাজনীন আক্তারকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় লিজাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নগরীর শাহ মখদুম থানায় স্বামী সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করতে যান রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী লিজা রহমান। তবে পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায় একপর্যায়ে তিনি থানার সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
পরে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে লিজার শ্বাসনালীসহ শরীরের প্রায় ৬৪ শতাংশ পুড়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার (০২ অক্টোবর) সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় কলেজছাত্রী লিজা।
লিজার সহপাঠীরা জানান, রাজশাহীতে পড়ালেখা করতে এসে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মো. আলমের মেয়ে লিজা রহমান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের মাহবুবুল হক খোকনের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি গোবিন্দগঞ্জে গিয়ে লিজাকে বিয়ে করেন সাখাওয়াত। তবে সাখাওয়াতের পরিবার বিষয়টি জানতো না।
গত তিন মাস ধরে লিজা ও সাখাওয়াতের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। সাখাওয়াত লিজার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সম্প্রতি লিজার সঙ্গে সাখাওয়াত ও তার ভগ্নিপতি দেখা করেন। ওই দিন কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে লিজাকে মারধর করেন সাখাওয়াত ও তার ভগ্নিপতি। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে নগরীর শাহ মখদুম থানার পুলিশ তাকে পাত্তা দেয়নি। থানায় ধর্ণা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করেন লিজা।