গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর এক সময় প্রিয় আড্ডাস্থল ছিল ‘মাচা’। অনেকে আবার নামাজ ঘরে বা বিশ্রামের জন্যও মাচা ব্যবহার করতেন। এটি একসময় গ্রামের প্রায় সবগুলো বাড়ির সামনে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দেখা যেত। আগের মতো দেখা না গেলেও গ্রামের অনেক বাড়িতে এখনো মাচা ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে দিন দিন গ্রামীণ এই ঐতিহ্যবাহী মাচা হারিয়ে যাচ্ছে।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড চরবংশী গ্রামের একটি বাড়ির সামনে দেখা মেলে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মাচা। সেখানে একজনকে ঘুমাতেও দেখা গেছে।
ওই মাচার পাশেই আবদুল মান্নানের চায়ের দোকান রয়েছে। যার কারণে আড্ডাও ভালো জমে। তবে ওই এলাকায় যেতে রসুলগঞ্জ-হাজিমারা সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি মাচার দেখা মেলে। সুপারি গাছ কিংবা কাঠ দিয়ে তৈরি মাচাগুলো এখনো গ্রামের ঐতিহ্য বহন করছে।
জানা গেছে, গ্রামের কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সারাদিন কাজ শেষে নির্দিষ্ট স্থানের মাচাগুলোতে আড্ডা জমাতেন। তাদের আড্ডায় উঠে আসতো নানান আলোচনা। উঠে আসতো তাদের ছেলে বেলার সব গল্প। এক কাপ চা খেয়ে কাটিয়ে দিতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আবার গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলোও মাচাতেই আলোচনা হতো। এই মাচাতেই গ্রামের মানুষগুলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামাজ আদায় করতেন। কিন্তু দিন দিন আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে এই মাচাগুলো।
চা দোকানি আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আগে সব বাড়ির সামনেই মাচা ছিল। সবাই মাচাতেই নামাজ আদায় করতেন। আবার সন্ধ্যা বেলায় সবাই কাজ শেষে আড্ডা দিতেন এখানে বসে। এখনো কয়েকটি মাচা আছে। সেগুলোতে এখনো খেটে খাওয়া মানুষগুলোর আড্ডা জমে।'