মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় নদী ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাঙনে ইতিমধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়েছে সাত শতাধিক পরিবার।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভাঙনে স্বীকার পরিবারগুলো তাদের পৈত্রিক ভিটা মাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। কেউ অন্য এলাকায় জমি লিজ নিয়ে ঘর তৈরি করে থাকছে। কেউ কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে চলে যাচ্ছেন উপজেলা ও জেলা শহরে। কেউ বা আবার থাকছেন খোলা আকাশের নিচে পলিথিন দিয়ে ঘর তৈরি করে।
ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা থামছে না। ভাঙন রোধে সরকারের প্রতি বড় প্রজেক্ট চালু দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বন্দোরখোলা ইউনিয়নের হারুন আকন জানান, আমাদের এলাকায় এ পর্যন্ত প্রায় ৪ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে গ্রাম ছেড়েছে। এরা কেউ মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুরের দিকে কেউ বা আবার চলে যাচ্ছে ফরিদপুরে।
বালু ব্যবসায়ী বাবু হাওলাদার বলেন, 'পদ্মা নদী আমার বাড়িটি কেড়ে নেয়। এখন আমি পরিবার নিয়ে বছরে ৫ হাজার টাকা খাজনার বিনিময়ে অন্যর যায়গায় একটি ঘর তুলে থাকি।'
নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রীতম সাহা বলেন, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও চিফ হুইপ মহোদয়ের আদেশক্রমে ইতিমধ্যে নদী ভাঙন ঠেকাতে এই এলাকায় ৮৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। আজও প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুরের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙনের বিষয়ে আমরা সব সময় খোঁজ খবর নিচ্ছি। বিশেষ করে শিবচরের চরাঞ্চলের ভাঙনে মানুষের বেশী ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া নদী ভাঙন রোধে পাউবোকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেওয়ায় সম্প্রতি দেশের নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে শিবচরের নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় চল্লিশটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ডুবে গেছে বাড়ি ঘর, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, রাস্তাঘাট।