উখিয়ায় ৪ খুন, দুই সপ্তাহেও রহস্যের জট খুলেনি

কক্সবাজার, দেশের খবর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কক্সবাজার | 2023-08-31 14:34:45

কক্সবাজারের উখিয়ায় একই পরিবারের চারজনকে জবাই করে হত্যার দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনো হত্যাকারী বা হত্যার কারণ জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত কোন আসামিকেও আটক করতে পারেনি পুলিশ।

এ নিয়ে নিহতের স্বজন ও প্রতিবেশীসহ নানা মহলে গুঞ্জন উঠেছে, ঘটনায় জড়িতরা আত্মগোপন বা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছে।

তবে পুলিশ বলছে, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত বা গ্রেফতারের নানাভাবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এখানে নিরাশ হওয়ার মত কিছু নেই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, গত ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার মা সুখিবালা বড়ুয়া (৬৫), রোকেনের স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৬), তাদের ছেলে রবিন বড়ুয়া (২) এবং রোকেলের ভাই শিপু বড়ুয়ার মেয়ে সনি বড়ুয়া (৬) কে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরপরই পুলিশের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং পিবিআই ও সিআইডির বিশেষ টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। এছাড়াও মামলার বাদী ও সাক্ষীসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। এ ঘটনার পর ২৬ আগস্ট রাতে রোকেনের শশুর শশাংক বড়ুয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

প্রতিবেশী সুরেশ বড়ুয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, হত্যাকারীরা কিভাবে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেছে এ বিষয়টিকে তদন্ত কাজে গুরুত্ব দিলে রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে। প্রায় দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনো কোন ফলাফল না হওয়ায় চিন্তিত আমরা।

তবে কুয়েত প্রবাসী রোকন বড়ুয়া মা, স্ত্রী ও সন্তানকে হারিয়ে নির্বাক। ঘটনার দুই সপ্তাহ পার হলেও রহস্য বা কোন আসামি আটক না হওয়ায় তিনি অনেকটা হতাশ বলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান।

রোকন বলেন, তার পরিবারের কারো সঙ্গে এমন নৃসংশ ঘটনা ঘটানোর মতো সম্পর্ক ছিল না। এক প্রতিবেশীর সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ থাকলেও এমন ঘটনা ঘটাবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত আমি।

তবে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে আন্তরিকতা নিয়ে তার কোন প্রশ্ন নেই জানিয়ে রোকন বলেন, দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনো খুনিরা আটক না হওয়ায় তিনি হতাশ।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) নুরুল ইসলাম মজুমদার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ নিরলসভাবে তদন্ত করে যাচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে সার্বক্ষণিক পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও খবর রাখছেন।

হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত জানিয়ে তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে ঘনিষ্ট কেউ জড়িত থাকতে পারে। আর তারা (হত্যাকারীরা) যে পথ প্রবেশ দিয়ে করুক না কেন ছাদের উপর দিয়ে বেরিয়ে গেছে এটা নিশ্চিত। পরিচিত কেউ ছাড়া ছাদ দিয়ে যে বের হওয়া যায় তা তো কেউ জানবে না।

নুরুল ইসলাম মজুমদার আরও বলেন, এ পর্যন্ত প্রতিবেশীসহ ২০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যাকেই তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন মনে করেছি তাকেই থানায় এনেছি। তবে এখনো হতাশ হওয়ার কিছুই নেই বলে মন্তব্য করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর