বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের কুষ্টিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। হৃদয় বিদারক এ ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না তার স্বজনরা।
সোমবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডে আবরারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার পরিবারে সদস্যদের আহাজারি।
আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ বলেন, “আমার ভাইয়াটা অনেক ভালো ছিলো। ভাইয়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো, রাজনৈতিক কোন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল না।”
মৃত্যুর ৮ ঘণ্টা আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া আবরার ফাহাদের স্ট্যাটাসের প্রসঙ্গ তুলে তার ছোট ভাই বলেন, “ভাইয়া ভারত বিদ্বেষী না, স্বদেশপ্রেমী। আসলে এ ধরনের একটা স্ট্যাটাস ভাইয়া পোস্ট করেছিল হয়তো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েই, ফেসবুকের সেই পোস্ট কাল হলো ভাইয়ার!”
আরও পড়ুন:আবরারের শেষ ফেসবুক স্ট্যাটাস!
ফাহাদের শোকার্ত মা রোকেয়া খাতুন আহাজারি করে বলেন, “ছেলেটা ঢাকা মেডিকেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বুয়েটে চান্স পেয়েছিল। সব বিসর্জন দিয়ে ভর্তি হয় বুয়েটে ইঞ্জিনিয়ার হবে বলে। আজ ছেলেটা লাশ!”
কে বা কারা কী কারণে তার ছেলেকে হত্যা করেছে জানেন না রোকেয়া খাতুন। যারাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শের-ই–বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আঘাতেই আবরার ফাহাদের মৃত্যু হয় বলে সোমবার ময়না তদন্ত শেষে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ।
ব্র্যাকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ এবং রোকেয়া দম্পতির বড় ছেলে নিহত আবরার ফাহাদ। ২০১৫ সালে কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন ‘এ’ পেয়ে উত্তীর্ণ হন আবরার। পরে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন ঢাকা নটরডেম কলেজে। সেখান থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন ‘এ’ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে বুয়েটের ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস বিভাগে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। ফাহাদ সেখানে শের-ই-বাংলা হলের ১০১১ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
আরও পড়ুন:
আবরার হত্যার ঘটনায় ৬ জন আটক