কর্মহীন হয়ে পড়েছেন নদী ভাঙনের শিকার মানুষ

রাজবাড়ী, দেশের খবর

সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজবাড়ী | 2023-08-27 00:32:28

পদ্মা নদীর অব্যাহত ভাঙনের ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় তিন শতাধিক মানুষ। সহায় সম্বল হারিয়ে এখন তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। জীবিকার সন্ধানে এখন দিনরাত ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা।

নদীগর্ভে ভিটেবাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ায় এখন তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে এখন তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নদীগর্ভে চলে যাওয়া চারটি গ্রামের পুরুষেরা এখন কিছুই করতে পারছেন না। নিজের জমিতে ফসল ফলিয়ে বা অন্যের জমিতে কৃষি শ্রম দিয়ে সংসার চালাতেন তারা। কিন্তু ভিটেমাটির সঙ্গে কৃষিজমিও বিলীন হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় তিন শতাধিক পুরুষ। উপায়ন্তর না পেয়ে তাদের বেশির ভাগই এখন দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিওয়ালার কাজ করছেন। জীবন-জীবিকার তাগিদে এখন তারা ঘাট এলাকায় নদীপারের জন্য অপেক্ষারত যানবাহনের যাত্রীদের কাছে বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। কেউ বা আবার রিকশা চালাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়ায় ঢাকা-খুলানা মহাসড়কে নদীপারের জন্য অপেক্ষারত যানবাহনের যাত্রীদের কাছে চানাচুর মাখা, চপ, সিঙ্গারা, কলা, কতবেল, আখের রসসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি করছেন তারা। কেউ বা আবার ঠাণ্ডা পানি ও শশা বিক্রি করছেন। দৌলতদিয়ায় এমন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ রয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই নদী ভাঙনের শিকার।

Rajbari
বাড়ি-জমি হারিয়ে এখন তারা ফেরিওয়ালা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পারের জন্য কোনো যাত্রীবাহী বাস এলেই এক সঙ্গে চার-পাঁচজন ছুটে যান। কে কার আগে বাসে উঠবেন সে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। বিক্রি না হলে খাবার জুটবে না। তাই এভাবেই তারা ছুটে বেড়ান।

পিঁয়াজু বিক্রেতা সালাম শেখ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও আমার ঘরবাড়ি ছিল। আজ কিছুই নেই। এখন আমি সহায় সম্বলহীন একজন অসহায় মানুষ। আমার তেমন কোনো অর্থও নেই। তাই জীবিকার তাগিদে আজ ঘাটে ফেরি করে পিঁয়াজু বিক্রি করছি।’

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মণ্ডল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এরই মধ্যে আফছার শেখের পাড়া, ধল্লাপাড়া, হাতেম মণ্ডল পাড়া ও লালু মণ্ডলের পাড়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে কৃষি জমি হারিয়ে এসব গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক পুরুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এখন তারা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারের উচিত তাদের সহজ কিস্তিতে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করা।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর