প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জাতীয় সংসদে আলোচনা ছাড়াই আপনি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের পানি, উপকূল, বন্দর ও গ্যাস দিতে পারেন না। এটা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ কথা বলায় দেশপ্রেমিক আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করলো আপনার পোষ্য বাহিনী। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে আজও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারলেন না।
তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিনা ভোটের সরকারের সকল অন্যায়-অপকর্ম দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রতিবাদ করতে পারতেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সে কারণেই তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলায় প্রহসনের বিচারে কারারুদ্ধ করে রেখেছেন। তাতেও আপনার শেষ রক্ষা হবে না। আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করছেন, সময়ের ব্যবধানে একদিন আপনাকেও এর চেয়ে জঘন্যতম পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে, ভারত সফরে করা ‘দেশ বিরোধী’ চুক্তি বাতিল, বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি ও বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে খুলনা নগরীর কে.ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর শাখার সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, তিস্তায় পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশের জনগণ। আবার অসময়ে ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি করা হয়েছে। ভারতের আবদারে এখন আবার ফেনী নদীর পানি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় রাডার বসিয়ে নজরদারি করবে ভারত! তাতে আর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব থাকল? আবার রাডার বসানোর কারণে অহেতুক অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বৈরিতার সৃষ্টি হতে পারে। মংলা বন্দর কার স্বার্থে? কিসের বিনিময়ে ভারতকে ব্যবহার করতে দিচ্ছেন? সেটা জানতে চাইতেই পারে বাংলাদেশের জনগণ। একারণে পিটিয়ে মেরে ফেলবেন?
তিনি বলেন, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড গত ১১ বছর ছাত্রলীগের অপকর্মের বহিঃপ্রকাশ। সমগ্র বাংলাদেশের পবিত্র ক্যাম্পাস দখল করে বিরোধী দল-মত দমনে টর্চার সেল বানিয়েছে ছাত্রলীগ। এ সময় হাজার হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপর নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য বানিয়েছে তারা। যার কারণে মেধাবী ছাত্ররা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। সকল শিক্ষাঙ্গনের ক্যাম্পাস থেকে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে উৎখাতে আজ সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনরত; তাদের আন্দোলনের ভাষা দেশবাসীর মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ।
জনসমাবেশে আরও বক্তৃতা দেন, জেলা বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সৈয়দা নার্গিস আলী, আমীর এজাজ খান, দেলোয়ার হোসেন খোকন, এড. ফজলে হালিম লিটন, মীর কায়সেদ আলী, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, খান জুলফিকার আলী জুলু, আরিফুজ্জামান অপু, কামরুজ্জামান টুকু, মোল্যা মোশাররফ হোসেন, খায়রুল ইসলাম খান জনি, সৈয়দা রেহেনা ঈসা, মাহবুব হাসান পিয়ারু, মুজিবুর রহমান, একরামুল হক হেলাল ও শফিকুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।