কক্সবাজারে নকশাবহির্ভূত ২৪৮ ভবন, নোটিশে সীমাবদ্ধ কর্তৃপক্ষ

কক্সবাজার, দেশের খবর

মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কক্সবাজার | 2023-08-31 06:28:13

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে নকশাবহির্ভূত দালান নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। তবে মানা হচ্ছে না কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) নির্দেশনা। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারী ভূমি মালিকরা, তবে বেপরোয়া আবাসন কোম্পানিগুলো।

অভিযোগ আছে, কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তার প্রশ্রয়ে বাড়ির মালিক ও নির্মাতারা ধরাকে সরা জ্ঞান করেন। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নামমাত্র তদারকি করে। ফলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়ছে। কারণ, ভূমিকম্প বা দুর্যোগে এসব ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা আছে। আর অগ্নিকাণ্ড বা অন্য কোনো সমস্যা হলে তা নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হবে।

ভবন নির্মাণ-সংক্রান্ত নীতিমালায় উল্লেখ আছে- প্লটের আকৃতিভেদে ৬-১০ তলা পর্যন্ত বাড়ি, আবাসিক ভবন, শিল্প-কারখানাসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন নির্মাণ করতে হলে দু’পাশে ও পেছনে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা খালি রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে ৩ কাঠা প্লটের জন্য পেছনে ও দু’পাশে সাড়ে ৩ ফুট, ৪ কাঠার জন্য পেছনে ৫ ফুট ও দু’পাশে সাড়ে ৩ ফুট এবং ২০ কাঠা কিংবা তার বেশি জায়গার জন্য পেছনে ৭ ফুট এবং দু’পাশে সাড়ে ৪ ফুট করে জায়গা ছাড়তে হবে। যাতে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু কউক অনুমোদিত ভবন নির্মাণে এ নীতিমালার কিছুই মানা হয়নি।

কউক সূত্রে জানা গেছে, কার্যক্রম শুরুর পর থেকে শহরের ২৪৮টি ভবনের নকশা অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি। কিন্তু ভবন মালিকরা কোনো নিয়ম মানেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কউক’র একজন কর্মকর্তা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘অতিরিক্ত মুনাফার আশায় মালিকরা জমি ছেড়ে ভবন নির্মাণ করছেন না। ভবনে আলো-বাতাস-অক্সিজেন প্রবেশের চিন্তা করা হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে কউক’র অনুমোদিত অন্তত দুই শতাধিক ভবন ধসে পড়বে। আর ভবন ধস ও আগুন লাগলে যথাসময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে। ভবন-মালিকরা এসব বিষয়ে ভাবেন না। ফলে দিন দিন ঝুঁকি বাড়ছে। এসব কাজে অবশ্য কউক’র কর্মকর্তারাও জড়িত থাকতে পারেন।’

নগর বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভবন নির্মাণে যারা নকশা করেন তাদের নীতি-নৈতিকতার অভাব রয়েছে। কারণ, ভবন নির্মাণে অনুমতির জন্য এক ধরনের নকশা থাকে এবং ভবনের জন্য আরেক ধরনের নকশা থাকে। এ দুটি বিষয় প্রকাশ্যে আসলে দুর্নীতি কমবে। তবে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণে জড়িতদের শাস্তি ও জরিমানার আওতায় আনা উচিত।

এ বিষয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া একটি ভবনেও নির্দেশনা মানা হয়নি। তাই তাদেরকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যারা নিজেদের সংস্কার করে নিচ্ছে তাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আর যারা নোটিশও মানবেন না তাদের ভবনের নকশা বাতিল করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর