১৬ বছর ধরে সম্মেলন হচ্ছে না ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের। ইতোমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ এই উপজেলা কমিটির সভাপতিসহ ১৭ জন নেতা প্রয়াত হয়েছেন। আবার কমিটিতে থাকা অনেক নেতাই বয়সের কারণে রাজনীতি করতে পারেন না। ফলে অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়ছে সাংগঠনিক কার্যক্রম।
অপরদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের বয়স্ক নেতাদের দুর্বল নেতৃত্বের কারণে রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন পদপ্রত্যাশী তরুণ নেতৃত্ব। তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ বিরোধ। ফলে দলে দেখা দিয়েছে বিভক্তি।
জানা গেছে, ২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন হয়। ৬৭ সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটিতে সভাপতি পদে ডা. ক্যাপ্টেন (অব) মজিবুর রহমান ফকির এমপি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিধু ভূষণ দাস নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ১৬ বছরের মধ্যে ওই কমিটি থেকে প্রয়াত হয়েছেন সভাপতি ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবদুল গণি, একেএম আজিজুল হক বাবু চেয়ারম্যান, অধ্যাপক মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাদির, অর্থ সম্পাদক শংকর হোম রায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবদুস ছালাম, কার্যকরী কমিটির সদস্য পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল আলী, শিল্পপতি এমএ হান্নান, আবদুল মজিদ, আবুল কালাম, আহাম্মদ আলী, সাহাব উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, আবদুল কদ্দুছসহ ১৭ জন।
পরবর্তীতে প্রয়াত নেতাদের শূন্য পদে অনেককেই স্থলাভিষিক্ত করা হয়। আবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অনেকেই পদ থেকে অব্যাহতিও পেয়েছেন। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয় রাজনীতির মাঠে বিতর্ক আছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২ মে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ডা. ক্যাপ্টেন (অব) মজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান সিনিয়র সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. হেলাল উদ্দিন। তিন বছর ধরে প্রবীণ এই নেতার নেতৃত্বেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
এদিকে, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সব কমিটি নতুন করে গঠনের নির্দেশ আসার পর চাঙা হতে শুরু করেছে গৌরীপুর আওয়ামীলীগের রাজনীতি। তবে নতুন কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে হবে নাকি আহ্বায়ক কমিটি হবে তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
গতকাল শুক্রবার গৌরীপুর প্রেসক্লাবে উপজেলার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলন করে আহ্বায়ক কমিটি না করে সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামীলীগসহ ইউনিটের কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীরা কমিটি গঠনের বিষয়ে তাদের দাবি জানাতে পারেন। তবে কমিটি আহ্বায়ক নাকি সম্মেলনের মাধ্যমে হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা।’