লক্ষ্মীপুরে মাদরাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে গুরুতর আহত মো. মাছুম নামে এক ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন রয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মোবারক করিম। ঘটনার পর থেকেই শিক্ষক আত্মগোপনে রয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে দক্ষিণ মজুপুর উলুম নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসা থেকে স্বজনরা ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। মাছুম সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নে দিঘলী গ্রামের মো. আবদুল হাই এর ছেলে এবং ওই মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।
এদিকে গত ৪ সেপ্টেম্বর জেলা শহরের তানজিমুল মিল্লাত একাডেমির এজাজ রায়হান নামে এক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করায় শিক্ষক ছায়েদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ১০ জানুয়ারি সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের রওযাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক আবদুল কাদের ছাত্র ইয়াছিন আরাফাতকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করে। শিক্ষার্থীদের ওপর এসব নির্যাতন বন্ধে সচেতন মহল প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
আহত ছাত্রের বাবা আবদুল হাই জানান, মাছুম মাদরাসার আবাসিকে থেকে পড়ালেখা করছে। গত কয়েকমাস ধরে সে অসুস্থ রয়েছে। তবুও সে পড়ালেখার জন্য মাদরাসায় অবস্থান করছিল। বাড়িতে যেতে বললেও যায়নি। অসুস্থতার কারণে সোমবার ভোরে নিয়মিত প্রাতঃছবকে সে অংশ নিতে পারেনি। কিন্তু শিক্ষক মোবারক এটি মেনে নিতে পারেনি। তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে মাছুমকে এলোপাতাড়ি বেত্রাঘাত করে। এতে মাছুমের পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। একপর্যায়ে মাছুম অচেতন হয়ে পড়ে। পরে অন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মাদরাসা থেকে মাছুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
আহত ছাত্র মো. মাছুম বলেন, অসুস্থ থাকায় আমি নিয়মিত ছবকে যেতে পারিনি। এ অপরাধেই শিক্ষক আমাকে বেত দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. বাবর হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই ছাত্রকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার পিঠ ও কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেত্রাঘাতের জখমের চিহ্ন রয়েছে।
সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমাদেরকে কেউ জানায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রিদোয়ান আরমান শাকিল বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ওই ছাত্রের পরিবারকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হবে।