বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শাঁওইল গ্রামে ঢুকলেই কানে ভেসে আসবে খট খট শব্দ। ভোর থেকেই শুরু হয় তাঁতের এই শব্দ। এখানকার প্রতিটি ঘরেই তৈরি হচ্ছে চাদর, শাড়ি, গামছা, লুঙ্গি, থ্রি-পিসসহ অন্যান্য বস্ত্র। শুধু শাঁওইল গ্রাম নয় আশেপাশের গ্রামগুলোর প্রায় ১৫ হাজার পরিবার এই তাঁত শিল্পকে নির্ভর করেই টিকে আছে।
গ্রামের প্রায় প্রত্যেকটি ঘরে রয়েছে তাঁত যন্ত্র। কোনো কোনো ঘরে দুইটি থেকে শুরু করে ৫টি পর্যন্ত তাঁত রয়েছে। কোনটি চাকাওয়ালা আবার কোনটি তৈরি করা হয়েছে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে।
শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে শাওইলসহ আশেপাশের তাঁতীরা কম্বল তৈরির কাজ শুরু করে। এছাড়া বছর জুড়েই চলে ছোট ও বড় বিছানার চাদর, লুঙ্গি, গামছা, তোয়ালাসহ বিভিন্ন ধরনের পোষাক তৈরির কাজ।
পুশিন্দা গ্রামের অনিতা রানী বার্তা টোয়েন্টি ফোর.কমকে জানান, গ্রামের অধিকাংশ মানুষের মূল পেশা তাঁত শিল্পকে ঘিরে। বগুড়ার আদমদিঘী, দুপচাঁচিয়া ও পাশ্ববর্তী জয়পুরহাটের আক্কেলপুরসহ ৭৫ গ্রামের প্রায় সাত হাজারেরও বেশি তাঁতী পরিবার আছে। এদের কেউ বংশ পরম্পরায়, কেউবা আবার নতুন করে এ পেশায় এসেছেন।
শাঁওইল গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, এখানকার চাঁদরের মান উন্নত হওয়ায় বাংলাদেশসহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
নশরৎপুর ইউনিয়ন তন্তুবায় সমবায় সমিতির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বার্তা টোয়েন্টিফোর.কমককে বলেন, শাঁওইল গ্রামের চার হাজার পরিবার এবং ১০ কিলোমিটারের মধ্যে আরো ১০ হাজার পরিবার তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি পরিবারই এখন স্বাবলম্বী। তাদের সংসারে কোন অভাব নেই।
তিনি বলেন, এই তাঁত শিল্পের মাধ্যমে শাঁওইল বাজারে বছরে ৪০০ কোটি টাকা লেনদেন হলেও এখানে ব্যাংকের কোন শাখা নাই। রাস্তা সরু হওয়ায় ট্রাক প্রবেশ সমস্যা ছাড়াও বাজারে কোন শেড নেই। ফলে ক্রেতা বিক্রেতাদেরর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।