চাঁদপুুর শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকায় স্ত্রী সালমা বেগমকে (৩৮) শ্বাসরোধ করে হত্যার অপরাধে স্বামী গফুর মিজিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় দেন।
হত্যার শিকার সালমা চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্রীরামদী মাদরাসা রোডের মৃত খালেক বেপারীর মেয়ে এবং গফুর মিজি ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ভাটিয়ালপুর এলাকার চির্কা চাঁদপুর গ্রামের মৃত রহমান মিজির ছেলে। সে পেশায় একজন শ্রমিক ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে সালমার ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম (১৯) বোনের বাসায় আসেন। রাতের খাবার শেষে সাইফুল পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আনুমানিক ১২টা ৩৫মিনিটে ঘরে আসেন গফুর মিজি। তখন স্ত্রী তাকে বলেন, আপনি রাতে দেরি করে আসেন কেন? এত রাতে বাহিরে কি করেন। এই নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
পরদিন ২১ অক্টোবর ভোর ৬টায় সালমার ছোট ভাই সাইফুল ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার বোনের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে এবং গলায় ফাঁসের চিহ্ন রয়েছে। তাৎক্ষণিক সে চাঁদপুর মডেল থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় ২১ অক্টোবর চাঁদপুর মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। ২০১৬ সালের ৩০ জুন ময়নাতদন্ত হাতে পাওয়ার পর পুলিশ নিশ্চিত হয় সালমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। সেই আলোকে সালমার মা রহিমা বেগম ১ জুলাই গফুর মিজিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ আসামি গফুর মিজিকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সময়ে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হালিম সরকার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আমান উল্যাহ বলেন, মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামির উপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. সাইফুল ইসলাম শেখ।