নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সানোখালি গ্রামে নিজ বাড়ির ছাদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মো. গোফরান মিয়ার (৭৫) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিহতের বড় ছেলে মো. শাহজামাল মানিক হত্যার অভিযোগে চাটখিল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় সানোখালি গ্রামের মৃত হাবিব উল্যাহর ছেলে মো. আবুল হাসেমকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪-৫ জনকে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- সানোখালি গ্রামের রেজাউল করিম রিংকু, জহির ইকবাল, মো. জনি, মো. জিয়াউল করিম রিপন, দিদার হোসেন, নুপুর বেগম, টুনি বেগম ও মধ্য বদলকোট গ্রামের ঠাকুর বাড়ির কেরাম আলীর ছেলে মাসুদ আলম।
এ ঘটনায় নোয়াখালী পিবিআই ও চাটখিল থানা পুলিশ একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গত ১৭ অক্টোবর সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মো. গোফরানের নিজ বাড়ির ছাদ থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
থানায় অভিযোগ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গোফরান মিয়া স্বপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। ঢাকা ও চাটখিলে তার প্রায় শত কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। তার অনুপস্থিতিতে সম্পত্তি দেখাশুনার দায়িত্ব দেওয়া হয় আবুল হাসেম, রেজাউল করিম রিংকু, জহির ইকবাল, মো. জনি, জিয়াউল করিম রিপন, দিদার হোসেন ও মাসুদ আলমকে। ২০১৮ সালে গোফরান মিয়া সম্পত্তির আয়-ব্যয়ের হিসাব চাইলে আসামিরা অপরাগতা প্রকাশ করে এবং তাকে ভয়ভীতি দেখায়। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার সালিশও হয়।
এমনকি ২০১৮ সালের ২ মে গোফরান মিয়াকে অমানবিকভাবে মারধর করে আসামিরা। ওই ঘটনায় গত ১২ মে আসামিদের বিরুদ্ধে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতে মামলা করেন গোফরান মিয়া। এরপর থেকে আসামিরা তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিতে থাকে।
গত ১০ আগস্ট গোফরান মিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসেন। গত ১৬ অক্টোবর তিনি চাটখিলের সানোখালি গ্রামের বাড়িতে যান। ১৭ অক্টোবর সকালে আনুমানিক ১০টায় সকালের নাস্তা খেয়ে তিনি ভবনের ছাদে যান। সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামিরা গোফরান মিয়াকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এক পর্যায়ে মরদেহ লুঙ্গি দিয়ে সিঁড়ির রডের সঙ্গে বেঁধে রেখে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
গোফরানের মেয়ে রুবিনা ইসলাম জানান, সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশেই পরিকল্পিতভাবে তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান। কারণ ঘটনার পর অনেক আসামি গা ঢাকা দিয়েছেন।
স্থানীয় নোয়াখলা ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিল সোহাগ বলেন, আলামত দেখে এটাকে হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। তবে পুলিশের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।