সচেতনতার অভাবে মেহেরপুরে ছড়াচ্ছে অ্যানথ্রাক্স

মেহেরপুর, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মেহেরপুর | 2023-08-30 02:43:12

জনসচেতনার অভাবে মেহেরপুরে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) ছড়াচ্ছে বলে মনে করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। আক্রান্ত পশুর মাংস নাড়াচাড়া ও গবাদিপশুর টিকা প্রদানে অনীহার ফলে চলতি বছর গাংনী উপজেলায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে অ্যানথ্রাক্স। গত মাস থেকে জেলার সব গবাদিপশুর টিকা প্রদানের বিষয়ে বিশেষ কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সাহারবাটি ইউনিয়নের ধর্মচাকী গ্রামে এক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদান করে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকরা। ওই গ্রামের দুই শতাধিক গরু, ছাগল ও ভেড়ার শরীরে টিকা দেওয়া হয়।

এ কার্যক্রমের মাধ্যমে গাংনী উপজেলার প্রতিটি গ্রামের গবাদিপশুর অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদান নিশ্চিত করতে চায় প্রাণিসম্পদ বিভাগ। প্রতি বছর মেহেরপুর জেলায় পালিত লক্ষাধিক গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ কোরবানি উপযুক্ত হয়। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ৫০-৬০ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া এখানে পালিত হয় পৃথিবী বিখ্যাত ব্লাক বেঙ্গল ছাগল। যার মাংস অন্যান্য যেকোন ছাগলের চেয়ে সু-স্বাদু। সারা বিশ্বজুড়েই রয়েছে এ ছাগলের মাংসের চাহিদা।

টিকা প্রদান কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: জাহাঙ্গীর আলম ও গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোস্তফা জামান।

অ্যানথ্রাক্সের টিকা প্রদান

এ প্রসঙ্গে ডা: জাহাঙ্গীর আলম মেহেরপুর জেলাকে গবাদিপশু পালনে উপযোগী এলাকা আখ্যায়িত করে বলেন, প্রাণ থাকলে রোগ থাকবে এ কথাটি যেমন সত্যি তেমনি সত্যি হচ্ছে পালনকারীদের সচেতনার অভাব। যারা কষ্ট করে অর্থ ব্যয় করে পশু পালন করছেন তাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে অ্যানথ্রাক্সের টিকা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

অপরদিকে আক্রান্ত পশুর মাংস খাওয়ার চিন্তা না করে অবশ্যই যথাযথভাবে মাটির নীচে পুতে দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে গরু পালনকারী কুঞ্জনগর গ্রামের মজনুর রহমান আকাশ বলেন, প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জনবলের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। যার ফলে আমরা যথাসময়ে টিকা পাইনা। জেলা পশু পালন বৃদ্ধি পেলেও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে না। ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে অনেক সময় পশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রের হিসেবে গেল ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে এ উপজেলার ৫ শতাধিক মানুষ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর মাংস নাড়াচাড়ার ফলে জীবাণুতে মানুষ সংক্রমিত হয়। তখন শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘা দেখা দেয়। অ্যানথ্রাক্স জীবাণু দীর্ঘদিন ধরে জীবিত থাকার ফলে প্রতিবছরই অ্যানথ্রাক্সে গবাদিপশু মারা যায় এবং মানুষ আক্রান্ত হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর