মাল্টা চাষে স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে আজিম

লক্ষ্মীপুর, দেশের খবর

হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-08-10 05:50:30

ফল বাগানের তরুণ উদ্যোক্তা আজিম উদ্দিন ভূঁইয়া। তার বাগানের মাল্টা লক্ষ্মীপুর বাজারে ফল দোকানিদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। যদিও প্রথম দিকে পোকামাকড় আর ইঁদুর তার স্বপ্নে বাগড়া দিয়েছিল। তবুও স্বপ্ন পূরণে দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে এখন সফল তিনি।

রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে ফল বাগান দিয়ে স্বপ্ন পূরণের বিষয়টি নিয়ে আজিমের সঙ্গে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের আলাপ হয়।

আজিম লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ ভূঁইয়ার ছেলে। কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রবাস জীবন ছেড়ে ফল চাষের উদ্যোগ নেন তিনি। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে অর্ধ-কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৮ একর জমিতে ফলের বাগান গড়ে তোলেন। যেখানে বেশির ভাগই স্থান পেয়েছে মাল্টা গাছ। পাশাপাশি বরই, পেয়ারা ও আম গাছ রয়েছে বাগানটিতে। এটি লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। বাগানটির নাম ভূঁইয়া ফুড গার্ডেন।

 ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

আজিম জানান, চাষাবাদে তার কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না। প্রবাস জীবনে তার উদ্যোক্তা হবার ইচ্ছে জাগে। এরপর প্রায় ৪ বছরের প্রবাস জীবনের ইতি ঘোষণা করে চলে আসেন নিজের ভূমিতে। দক্ষিণ চরবংশীতে ১০ বছরের জন্য জমি ইজারা নিয়ে ফলের বাগান গড়ে তোলেন। এটি এখন স্থানীয়দের কাছে মাল্টা বাগান হিসেবে পরিচিত।

জানা গেছে, বাগানটিতে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ টি ফলের গাছ রয়েছে। বরিশাল, নাটোর ও রাজশাহী থেকে গাছগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল। এসব গাছ পরিচর্যার জন্য দুইজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। এই বাগানের মাল্টা, পেয়ারা ও বরই স্থানীয় বাজারে সরবরাহ হয়েছে।

 ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসএসসি শেষ না করেই মায়ের কাছ থেকে সামান্য কিছু টাকা নিয়ে আজিম রাজধানী ঢাকায় কাজের সন্ধানে যান। সেখানে তিনি একটি কসমেটিকসের দোকানে প্রায় ৩ বছর চাকরি করেন। ২০১০ সালে পরিবারের সহযোগিতায় কাজের খোঁজে দুবাই যান তিনি। এক বছর কাটিয়ে প্রবাস থেকে ফিরে আসেন। পরে ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় যান। সেখানে গিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। ৪ বছর পর লক্ষ্মীপুর ফিরে এসে স্বপ্নের বাগান গড়ে তোলেন তিনি।

আজিম বলেন, ‘অভিজ্ঞতা ছাড়াই বাগান শুরু করেছিলাম। এজন্য প্রথমদিকে একটু সমস্যা হয়েছিল। সমস্যা উত্তরণের চেষ্টা করেছি আমি। এখন আমি অনেকটাই সফল। আমি এখন স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে। ইতোমধ্যে বাগান থেকে মাল্টা সংগ্রহ করেছি। লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন দোকানে আমার বাগানের ফল পাওয়া যাচ্ছে। এখনো ফল উৎপাদন কম হচ্ছে। তবে আল্লাহ সহায় থাকলে আগামীতে ফলন আরও ভালো হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর