ভোলার লালমোহনে যুবলীগ কর্মীর হাতে অমানবিক নির্যাতনের দেড় বছর পর থানায় মামলা করেছে ভিকটিমের স্ত্রী। নির্যাতনকারী এতটাই প্রভাবশালী ছিলো যে এতদিনে তার বিরুদ্ধে মামলা করতেও সাহস পায়নি কেউ। একটি ডাকাতি মামলায় নির্যাতনকারী গ্রেফতার হওয়ার পর ওই নির্যাতনের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে ভিকটিমের স্ত্রী লালমোহন থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলাসহ একাধিক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ডাওরি বাজারের বাণিজ্যিক মোটরসাইকেল চালক ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহার আলী বাড়ির মৃত আব্দুল মুন্নাফের ছেলে জসিম। জসিম ইয়াবা বিক্রি করতে রাজী না হওয়ায় বিএনপির সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে গত বছরের ২৫ জুলাই এভাবেই তার দুই কন্যা ও সন্তানের সামনে উলঙ্গ করে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী হাসান। ঐ এলাকার আবু ড্রাইভারের ছেলে হাসান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যের নিকটজন বলেও জানা যায়। পাশাপাশি নিজেকে যুবলীগের কর্মী বলে দাবি করেন তিনি। ফলে নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে কিংবা হাসানকে থামাতে সেদিন এগিয়ে আসেনি কেউ।
ভিকটিম জসিমের মা ও ভাবি জানান, ঘটনার পর থানায় অভিযোগও করেনি ভিকটিম কিংবা তারা। বরং আবার নির্যাতনের শিকার হতে পারে এই ভয়ে একেবারেই চুপ ছিলো গোটা পরিবারের সদস্যরা। এরইমধ্যে গত ঈদুল ফিতরের পরের দিন চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার হন জসিম। পরিবারের দাবি মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
এদিকে রোববার (২৭ অক্টোবর) রাতে একটি ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার হন সন্ত্রাসী হাসান। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে ঐদিনের নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ। স্থানীয় পুলিশ ভিকটিমের স্ত্রী জয়নব বিবিকে সোমবার দুপুরে ডেকে নিয়ে মামলা নেয়। দেরিতে হলেও ঘটনার বিচার চান জসীমের স্বজনরা।
লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল কবির জানান, সোমবার দুপুরে জসিমের স্ত্রী বাদী হয়ে হাসানের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। এই মামলাসহ তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অন্যান্য মামলাগুলোতে হাসানকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।