মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের সুলতান হোসেন এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। ৮ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে তার লোকসান হয়েছিল ৬ হাজার টাকা। অথচ ৮ টাকা কেজি দরের সেই পেঁয়াজ এখন ১৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে সুলতান হোসেনকে।
তাই আফসোস করে সুলতান হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন পেঁয়াজের ঝাঁজে মরছি।’
সুলতান হোসেন আরও বলেন, ‘পেঁয়াজ চাষের ওই জমিতে এবার মরিচ আবাদ করেছি। তবে মরিচের দাম এখন কম। তাই ফের লোকসানের আশঙ্কা করছি।’
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে মেহেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচা মরিচের পাইকারি বাজার গাংনী কাঁচা বাজারে কথা হয় সুলতান হোসেনের সঙ্গে।
চাষ সম্পর্কে সুলতান হোসেন বলেন, ‘পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। নিজের আবাদের পেঁয়াজ পানির দরে বিক্রি করে দিয়েছি। এখন চড়া দামে পেঁয়াজ কিনে খেতে হচ্ছে। আমরা কৃষকরা অধিকাংশ সময়ই এভাবে লোকসানের শিকার হই।’
সুলতানের মতো অনেক কৃষকই এখন পেঁয়াজ আবাদের লোকসান আর বর্তমান বাজার মূল্য নিয়ে মন খারাপ করছেন। গেল কয়েকদিন ধরে মরিচের দর পড়তির দিকে। লোকসানের নতুন দুশ্চিন্তা ভর করেছে কৃষকের মনে।
গাংনী কাঁচা বাজারে গেল দু’দিন প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮-২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গেল সপ্তাহে তা বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকায়।
কয়েকজন কৃষক জানান, গম ও মসুর বপনের সময় চলে এসেছে। বর্তমানে মরিচের দর কমে গেছে। মরিচ ক্ষেতে থাকলে লাভের চেয়ে লোকসান বাড়বে। তাই গম বা মসুর চাষ করার জন্য মরিচ গাছ কেটে ক্ষেত ফাঁকা করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গার আসাননগর থেকে গাংনী কাঁচা বাজারে আসা কাঁচা মরিচের পাইকারি ব্যবসায়ী লাল্টু মিয়া জানান, গেল সপ্তাহে একটানা বৃষ্টির কারণে অনেক ক্ষেতের মরিচ গাছ মারা যাচ্ছে। ক্ষেত ফাঁকা করার জন্য কৃষকরা বেশি পরিমাণে মরিচ তুলছেন। সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরান বাজারে পাইকারি ১৮-২৪ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি হয়েছে। তাই তারা কম দামে মরিচ কিনছেন।
একই বাজারের আরেক আড়তদার মহিবুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি ১১৫-১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা পর্যন্ত। গেল সপ্তাহে পেঁয়াজের দর ছিল ৯৫-৯৮ টাকা। বিভিন্ন মোকামে পেঁয়াজের দর বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ছে তাদের স্থানীয় বাজারে।