গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে জনবল সংকট, চরম ভোগান্তি

গাইবান্ধা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-17 17:56:07

পর্যাপ্ত জায়গা ও জনবল সংকটসহ নানান সমস্যায় জর্জরিত গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে ২০০ শয্যার অনুমোদন পাওয়া এই হাসপাতালে বর্তমানে ১০০ শয্যার জনবলের অনুমোদন আছে। এরপরও ৩৯টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদের মধ্যে চিকিৎসক ২০ জন ও অন্যান্য পদে ১৯ জন। এত কম জনবল দিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালে ২৫০-৩০০ জন রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। আর জরুরি ও বহির্বিভাগ মিলে হাসপাতালে সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা নেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে- পুরুষ, নারী, শিশু, ডায়রিয়া এবং গাইনিসহ সবগুলো ওয়ার্ডেই বেড বা জায়গার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে কক্ষের ভেতরে ও বারান্দার মেঝেতে গাদাগাদি করে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। অনেকে বেড না পেয়ে মেঝেতে শুধু চাদর বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর দোতলায় মহিলা ওয়ার্ডের বারান্দায় ফ্যান না থাকায় রোগীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে।

হাসপাতালে বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি

হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজন জাহানারা বেগম জানান, হাসপাতালে বেড না পেয়ে চাদর বিছিয়ে মেঝেতে রোগীকে শুইয়ে রেখেছেন। এমনকি তিনি রোগীর স্যালাইন লাগানোর স্ট্যান্ডও পাননি।

আরেক রোগীর অভিভাবক ফিরোজ কবীর জানান, ফ্যান না থাকায় হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে হচ্ছে। স্যালাইন ঝুলানোর স্ট্যান্ড নেই। এখানে রোগী ভর্তি করে সমস্যায় পড়েছেন তিনি।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানী ডোনার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নয়ন চন্দ্র রায় বলেন, ‘হাসপাতালে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চক্ষু এবং নাক-কান-গলার কোনো চিকিৎসক নেই। আর আজ পর্যন্ত এ হাসপাতালে চর্ম ও যৌন রোগের কোনো চিকিৎসক দেখা যায়নি। ফলে অনেক রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ফিরে যান।’

বেড না পেয়ে মেঝেতেই থাকছেন রোগীরা

নাম প্রকাশ না করা শর্তে হাসপাতালের একজন নার্স জানান, প্রতিদিন এই বিপুল সংখ্যক রোগী সামলানো অত্যন্ত কষ্টকর। কেননা ১০০ রোগীর নার্স দিয়ে ২৫০-৩০০ রোগীর সেবা দিতে হয়। এতে নার্সদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।

এসব বিষয়ে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মাহফুজার রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘শূন্য পদে জনবল চেয়ে অসংখ্যবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আজও জনবল পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসা সহায়ক উপকরণ সংকট নিরসন করা হচ্ছে এবং রোগীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর