ড্রেন ভরাট করে ভেজাল আচারের মার্কেট

কক্সবাজার, দেশের খবর

মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কক্সবাজার | 2023-08-23 07:15:27

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের প্রবেশমুখে দিন-রাত চলছে ড্রেন ভরাট। পানি চলাচলের গতিপথ বন্ধ করে মার্কেট নির্মাণ করছে একটি সিন্ডিকেট। যার ফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মাঝে। কারণ বর্ষা আসলেই স্বাভাবিকভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তার উপর এখন আবার ড্রেন ভরাট। তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। তবে, পর্যটন করপোরেশনের দাবি, সংস্থাটি উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনুমতিতে ৫০ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে ওই জমি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের হোটেল কল্লোলের অপর পাশে পৌরসভার ড্রেন ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে টিনশেড এই মার্কেট। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা কয়েকটি ডাম্পারে করে বাইরে থেকে মাটি এনে ভরাট করছে এ ড্রেন। রয়েছে কয়েকজন শ্রমিকও। ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে টিনের ছাউনি। মাটি ভরাট শেষ হলে এখানে নির্মাণ করা হবে ভেজাল আচারের দোকান। আর ওই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছে হাসান উল্লাহ নামে একজন। যাকে সহযোগিতা করছে কক্সবাজার পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের প্রবেশমুখে চলছে ড্রেন ভরাটের কাজ

স্থানীয় ব্যবসায়ীর অভিযোগ, এ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি পর্যটন করপোরেশনের কর্মকর্তারা। শহরের অন্তত ২৫ জন ভেজাল আচার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে এ মার্কেট গড়ে তুলছে। হাসান উল্লাহকে ব্যবহার করে এ সিন্ডিকেট ভেজাল আচারের মার্কেট গড়ে তুলছে। আর মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অনুমতি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে সিন্ডিকেটটির কয়েকজন। এই মার্কেটে প্রতিটি দোকান ঘর ভাড়া হবে এক লাখ টাকা করে।

পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা বলছেন, যেখানে ড্রেন করতে মরিয়া সব দফতরের কর্মকর্তারা। সেখানে এ মুহূর্তেই ড্রেন দখল করে টিনশেড মার্কেট নির্মাণ সত্যিই আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ মার্কেট হলে যেমন ভেজাল আচারের ছড়াছড়ি হবে সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের পর্যটন শিল্প। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তা উচ্ছেদ করা দরকার।

মাটি ভরাটের দায়িত্ব পাওয়া তুহিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, অনুমতি নিয়ে আমি মাটি ভরাট করছি। ড্রেন আছে কিনা জানিনা। তবে সেখানে পুকুরের মত জলাশয় ছিল। সেটা ভরাট করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান উল্লাহ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, পর্যটন করপোরেশন থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। একটি টিনশেড মার্কেট করা হচ্ছে। এখানে বিভিন্ন দোকান ফ্লট করা হবে। তবে তিনি ড্রেন ভরাটের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের প্রবেশমুখের ড্রেন

সৌন্দর্যবর্ধন করা হচ্ছে দাবি করে কক্সবাজর পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, এটি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জানিয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা ধরে এটা লিজ দেওয়া হয়েছে দুই থেকে তিন বছরের জন্য।

টিনশেড মার্কেটে কি সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়নি। শুরু হলে দেখতে পাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব-পর্যটন সেল) মো. আশরাফুল আফসার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আমরা শুনেছি জমিটি পর্যটন করপোরেশন অনুমতি দিয়েছে। যদি কেউ ড্রেন ভরাটের জন্য অভিযোগ করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। তবে আপনার থেকে জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর