সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ থেকে এমএ পাস করে ঢাকার ফুটপাতে ফল বিক্রয় করা আরিফ উদ্দিন নামের এক যুবকের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওতে দেখা য়ায়, লুঙ্গি পড়া অবস্থায় আরিফ ঢাকার ভাসানটেক এলাকায় ফুটপাতে আনারস, জাম্বুরা ও পেয়ারা বিক্রি করছেন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে আরিফকে নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি লাইভ ভিডিও প্রচার করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে আরিফ উদ্দিন বলেন, আমি সিলেটের মদন মোহন কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক পাশ করেছি। এরপর এমসি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে এমএ পাস করেছি। দুইমাস আগে চাকরির সন্ধানে সিলেট থেকে ঢাকা এসেছি। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও কোনও চাকরির সন্ধান পাচ্ছি না। ঢাকাতে থাকতে যে অর্থ দরকার তা পরিবার থেকে আনতে পারছি না। বাধ্য হয়ে বন্ধুদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ফুটপাতে ফলের দোকান দিয়ে ঢাকায় থাকার খরচ জোগাড় করছি।
আরিফ উদ্দিন বলেন, আমার পরিবারের অবস্থা তেমন ভালো না। যেহেতু অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছি তাই বাবা-মার কাছ থেকে টাকা আনতে বিবেকে বাধা দেয়। এখন বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করছি। সরকারি বিভিন্ন চাকরির জন্য ২শ, ৩শ, ৪শ টাকা দিয়ে আবেদন করতে হয়। এই টাকা প্রতিমাসে সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে যায়।
চাকরির জন্য মানসিক চাপে ভুগছেন জানিয়ে আরিফ বলেন, আমরা বয়স এখন ২৭। আর ৩ বছর আছে সরকারি চাকরির জন্য। পড়ালেখা শেষে পরিবার থেকে প্রতিনিয়ত চাপ আসছে চাকরির জন্য। আমার আরও অনেক বন্ধু আছে যারা প্রতি শুক্রবার ঢাকায় আসে চাকরির পরীক্ষার জন্য। তারাও আমার মতো হতাশ।
রাশেদ খাঁন এর এই লাইভ ভিডিওতে তাহেরা আক্তার সোনিয়া নামে একজন লিখেছেন, আমিও মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করে একটা হসপিটালে চাকরি পাই না, কারণ হচ্ছে আমার রেফারেন্স নেই। তাই বর্তমানে টিউশনি করে যাপিত জীবন চালাতে হচ্ছে। নাছির আহমেদ নামে আরেক জন কমেন্ট করেছেন, আমি বিব্রত নই, গর্বিত ওকে নিয়ে। দেশের দায়িত্ব যাদের তাদের তো লজ্জাবোধ নেই- ক্যাসিনো আছে। আরিফ জীবন যুদ্ধ এমনই। কাজি আনোয়ার হোসেন বলেছেন, হালাল রুজিতে আল্লাহ বরকত দিবেন।
জানা গেছে, আরিফ উদ্দিনের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নে।