সরকারি নিষেধাজ্ঞার নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার দীর্ঘ ২২ দিন পর পদ্মার বুকে ইলিশ ধরতে নেমেছে রাজবাড়ীর তিন উপজেলার প্রায় সহস্রাধিক জেলে। ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে এখন খুশির জোয়ার বইছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলেরা নদীতে ইলিশ ধরতে পারেনি। যার কারণে ওই সময় পরিবার নিয়ে তারা বেশ সমস্যার মধ্যেই ছিল। এর মধ্যে অনেক জেলে ঋণ নিয়ে তাদের সংসার চালিয়েছে।
তবে আজ থেকে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় এখন তারা বেশ আনন্দিত। ভোর থেকেই তারা নৌকা ও জাল নিয়ে পদ্মায় নেমে পড়ে। জেলেদের আশা এখন তারা ইলিশ ধরে সংসার চালাবে ও ঋণ পরিশোধ করবে।
গোয়ালন্দ এলাকার জেলে রমেশ সরকার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘দীর্ঘ ২২ দিন আমরা নদীতে নামতে পারিনি। এই সময়টা আমরা পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে কাটিয়েছি। সরকার আমাদের যে অনুদান দিয়েছিল তা খুবই কম।’
আরেক জেলে নৃপেন সরকার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এই কয়দিন আমরা অনেক জেলেই বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চালিয়েছি।’
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মজিনুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, রাজবাড়ীতে প্রায় ৯ হাজার জেলে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার জেলে সরাসরি ইলিশ ধরার সঙ্গে জড়িত। ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। যার কারণে তারা দীর্ঘ ২২ দিন নদীতে মাছ ধরতে পারেনি। তবে যারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে নদীতে নেমেছিল তাদের বেশির ভাগই মৌসুমি জেলে।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ীর তিন উপজেলা পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দের উপর দিয়ে ৮৫ কিলোমিটার পদ্মা নদী বয়ে গেছে। এবার নিষেধাজ্ঞার সময় অভিযান চালিয়ে ৩৯৪ জেলেকে আটক করে প্রশাসন। এরমধ্যে ২৯৭ জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। আর অভিযান চলাকালে ৩ হাজার ১৩০ কেজি ইলিশ, ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার অবৈধ কারেন্ট জাল, ৪টি নৌকা জব্দ করা হয়। জেলেদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া ইলিশ মাছ বহনের দায়ে রাজবাড়ীর দুই পুলিশ সদস্য ও জেলা মৎস্য অফিসের দুই কর্মচারীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।