ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ডাকঘর থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও সঞ্চয়পত্র ভেঙে টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না গ্রাহকরা। প্রতিদিন ডাকঘরে টাকা তুলতে গিয়ে গ্রাহকরা খালি হাতে ফিরে আসছেন। এ নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তবে ডাকঘর কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের দফতরে টাকা না থাকায় এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, লাভের আশায় গ্রাহকরা এখানে সঞ্চয়পত্র করেন। কেউ কেউ বিপদে আক্রান্ত হয়ে নিজেদের নামের সঞ্চয়পত্র উত্তোলন করে নিয়ে যান। কিন্তু চলতি মাসে টাকা উত্তোলন করতে না পারায় গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এ বিষয়ে গ্রাহক মদিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসার খরচের টাকার জন্য নিজের নামের সঞ্চয়পত্রের ভেঙে টাকা উত্তোলন করার জন্য ডাকঘরে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ জানায় টাকা নেই। এই অবস্থায় স্বামীর চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কায় আছি।
ডাকবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ ডাক ঘরে পরিবার সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩ হাজার, তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র রয়েছে ২ হাজার ও পেনশনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩৫০ জন গ্রাহকের। নির্দিষ্ট সময়ে এখান থেকে গ্রাহকরা তাদেও মুনাফার টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু অক্টোবর মাসে ঈশ্বরগঞ্জ ডাকঘর থেকে গ্রাহকদের মুনাফার টাকা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরজমিনে বুধবার (৩১ অক্টোবর) খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ ডাকঘরে মুনাফা উত্তোলনকারী গ্রাহকদের ভিড়। কয়েকজন গ্রাহকের সাথে বাকবিতণ্ডা হচ্ছে ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার সাধন সরকারের। নিজেদের মুনাফার টাকা কেন পাচ্ছেন না এমন প্রশ্নে জর্জরিত হচ্ছেন পোস্ট মাস্টার।
সেবা নিতে আসা গ্রাহক কামাল উদ্দিন বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে গত ১৮ মাস আগে জমা রাখা সঞ্চয়পত্রের ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করার জন্য ডাকঘরে ঘুরছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আজ নয় কাল এমন করে আমাকে ঘুরাচ্ছেন, কিন্তু টাকা দিচ্ছেন না।
আরেক গ্রাহক শাছুজ্জামান জানান, পেনশনী স্কিমে ৫ লাখ টাকা ও পারিবারিক সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। প্রতি মাসে ১৪ হাজার ৭০০ টাকা উত্তোলন করে নিজের সংসার চালান। কিন্তু অক্টোবর মাসে টাকা না পাওয়ায় হতাশায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরগঞ্জ ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার সাধন সরকার বলেন, এ মাসেই ঈশ্বরগঞ্জে যোগদান করেছি। টাকার চাহিদা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু টাকা না ছাড় না পাওয়ায় গ্রাহকদের দেওয়া যাচ্ছেনা। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।