অক্সিজেন সিলিন্ডারের দখলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার!

মানিকগঞ্জ, দেশের খবর

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসেপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মানিকগঞ্জ | 2023-08-21 20:16:03

জেলাবাসীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতাল। তবে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা এর দ্বিগুণ। গড়ে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪’শ রোগী আসেন বর্হিবিভাগের চিকিৎসাসেবা নিতে। যার অর্ধেকের বেশি নারী এবং শিশু।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরে আনাগোনা থাকে রোগীদের। চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ পেতে অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষায় শিশুদের দুগ্ধপান করানো নিয়ে বিপাকে পড়েন হাসপাতালে আসা মায়েরা।

শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর কোনো সুযোগ বা পরিবেশ নেই

অপরদিকে হাসপাতালে পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় শিশু ও নবজাতক বিভাগে নামেমাত্র একটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকলেও ওই কক্ষটি রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের দখলে। যে কারণে হাসপাতালে আগত বর্হিবিভাগের রোগী ছাড়াও বিপাকে রয়েছে শিশু ও নবজাতক বিভাগে ভর্তি হওয়া মায়েরা। তবে এ বিষয়ে পুরোপুরি উদাসীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসা নিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম’কে বলেন, তিন দিন বয়সী ছেলে শিশুর ঠান্ডাজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। পুরো বিভাগ জুড়ে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের আনাগোনা। এর মধ্যেই বাধ্য হয়ে তার শিশুকে দুগ্ধ পান করাতে হয় বলে জানান তিনি।

হাসপাতালে কমপক্ষে দুইটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার প্রয়োজন

বর্হিবিভাগের টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ আফসানা আফরোজ নামে এক নারী জানান, আধা ঘণ্টা ধরে টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। এরপর আবার অপেক্ষা করতে হবে চিকিৎসকের লাইনে। সব মিলিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টার অপেক্ষা। এ সময়ে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর কোনো সুযোগ বা পরিবেশ নেই বলে জানান তিনি। অচিরেই হাসপাতালে সুন্দর পরিবেশের একটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নির্মানের দাবি জানান তিনি।

হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডের ইনচার্জ অজিফা আক্তার (নার্স) জানান, শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডের পাশে একদম ছোট একটি কক্ষে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার রয়েছে। তবে কক্ষটি খুবই ছোট। এছাড়া সেখানে শিশুদের জন্য অক্সিজেন সিলন্ডার রাখায় সেখানে মাতৃদুগ্ধ পান করানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

শিশুদের জন্য অক্সিজেন সিলন্ডার রাখায় সেখানে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর জায়গা নেই

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স বলেন, শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে সব সময় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার না থাকায় বাধ্য হয়েই প্রকাশ্যে শিশুদের দুগ্ধ পান করাতে হয়। হাসপাতালে কমপক্ষে দুইটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল আওয়াল বলেন, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার মা ও শিশুদের জন্য খুব জরুরি। হাসপাতালের ব্রেস্ট ফিডিং কর্নারের কক্ষে অক্সিজেনের সিলিন্ডার রাখার বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ওই কক্ষটি মাতৃদুগ্ধ পানের জন্য উপযোগী করে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর