ময়মনসিংহের গৌরীপুর ডাকঘরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ থাকায় টাকার যোগান কমে গেছে। অপরদিকে ডাকঘরে টাকা না থাকায় সঞ্চয়পত্র, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা সহ বিভিন্ন অ্যাকউন্ট থেকে থেকে গ্রাহকরা টাকা তুলতে পারছেন না। প্রতিদিন ডাকঘরে দীর্ঘ অপেক্ষার পর খালি হাতে বাড়ি ফেরায় গ্রাহকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, লাভের আশায় গ্রাহকরা এখানে সঞ্চয়পত্র সহ বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট করেন। বিপদগ্রস্ত হলেই গ্রাহকরা নিজেদের নামের টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। কিন্তু চলতি মাসে টাকা উত্তোলন করতে না পারায় গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
তবে ডাকঘর থেকে জানানো হয়েছে, সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ। তাই আয় একদম তলানিতে ঠেকেছে। এ কারণে সব গ্রাহকের সমস্যা সমাধান করা যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ডাকবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগে চিঠি আদান-প্রদানের মধ্য দিয়েই ডাকঘরের আয় হতো। কিন্তু বর্তমানে আয়ের উৎস হলো সঞ্চয়পত্র বিক্রি, স্থায়ী আমানত (এফডিআর), সঞ্চয়, ডাক জীবনবিমা, রাজস্ব টিকিট ও ডাকটিকিট বিক্রি। সবচেয়ে বেশি আয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে। কিন্তু ৩১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ থাকায় ডাকঘরের আয় কমে গেছে।
গৌরীপুর ডাকঘরে পরিবার সঞ্চয়পত্র রয়েছে ২ হাজার ৭১১টি, তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র রয়েছে ২ হাজার ৮৮টি ও পেনশনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৪৯১ জন গ্রাহকের। এছাড়াও স্থায়ী আমানত (এফডিআর) সহ বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট আছে গ্রাহকের। নির্দিষ্ট সময়ে এখান থেকে গ্রাহকরা তাদের জমানো ও মুনাফার টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে গৌরীপুর ডাকঘর থেকে গ্রাহকরা তাদের টাকা তুলতে পারছেন না। এমনকি মুনাফার টাকা উত্তোলন করতে গিয়েও হয়রানি হচ্ছেন।
বুধবার বেলা ১১টায় গৌরীপুর ডাকঘরে গিয়ে দেখা যায় টাকা উত্তোলনকারী গ্রাহকদের ভিড়। টাকা না পাওয়ায় বেশ ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত গ্রাহকদের সাথে ডাক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাক-বিতণ্ডা হচ্ছে। এই নিয়ে বেশ বিব্রত কর্মকর্তারাও।
সেবা নিতে আসা গ্রাহক সাইদুর রহমান লিটু বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে ৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু পোস্টমাস্টার সাহেব আজ না কাল টাকা দেবেন বলে ঘুরাচ্ছেন। কিন্তু টাকা দিচ্ছেন না। সেবার এই নমুনা দেখে আমি হতাশ।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী গ্রাহক জানান, পরিবারের চিকিৎসার জন্য জরুরি টাকার প্রয়োজন। পোস্ট অফিসে এসে অনেকে টাকার জন্য অনেক অনুরোধ করলেও টাকা দেওয়া হয়নি। বলেছে এক সপ্তাহ পরে এসে যোগাযোগ করতে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরীপুর ডাকঘরের ভারপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার বজলুল হক বলেন, সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ হওয়ার পর থেকে পোস্ট অফিসে টাকা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাই সময়মত গ্রাহককে টাকা দিতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। গ্রাহকদের সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।