কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালির এককালের বিনোদনের প্রধান অনুষঙ্গ যাত্রাপালা। বাঙালির লোকসংস্কৃতির এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চামটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গ্রামীণ যাত্রাপালার আয়োজন করা হয়েছে।
কাত্যায়নী পূজা উপলক্ষে চামটা এগারো পল্লী সার্বজনীন কাত্যয়নী পূজা কমিটি এর আয়োজন করে। বুধবার (৬ নভেম্বর) গভীর রাত পর্যন্ত যাত্রাপালার অনুষ্ঠান চলে।
ধর্মীয় যাত্রাপালা সাধক রাম প্রসাদ ও শ্রীকৃঞ্চের আর্বিভাব উপভোগ করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, বালিয়াকান্দি সরকারি কলেজের প্রভাষক রাকিব হাসান, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি ইদ্রিস আলী ফকির, প্রেসক্লাবের সভাপতি রঘু নন্দন শিকদার, নির্মল সাংস্কৃতিক একাডেমির অধ্যক্ষ উত্তম কুমার গোস্বামী ছাড়াও স্থানীয় হাজারো মানুষ।
চামটা এগারো পল্লী সার্বজনীন কাত্যয়নী পূজা কমিটির সভাপতি অসিত বরণ রায় বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা কাত্যয়নী পূজা উপলক্ষে প্রতিবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকি । তারই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছি। এরমধ্যে দুই দিন ধর্মীয় যাত্রাপালা বাকি তিনদিন অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক ভরত মন্ডল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, যাত্রাপালা আমাদের সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। যাত্রাপালা নিয়ে বিভ্রান্তি ও ভুল ধারণা দূর করতেই এ আয়োজন।
তিনি জানান, রাত ১০টার পর যাত্রাপালা শুরু হয়। চলে রাত দুইটা পর্যন্ত।
চামটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হরষিত ঘোষ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ভিনদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনে আজ আমাদের দেশিয় সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। যাত্রাপালা বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে। এটি আমাদের লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য। এটিকে ধরতে এ আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন বয়সের মানুষ রাত জেগে এ আয়োজন উপভোগ করছে।’
শ্রীকৃঞ্চের আর্বিভাব ও সাধক রাম প্রসাদ যাত্রাপালা দুটিতে অভিনয় করেছেন খুলনার বীনাপানি নাট্য সম্প্রদায়ের শিল্পীরা। আর এটি পরিচালনায় রয়েছে নিষ্কৃতি মন্ডল।