ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় লক্ষ্মীপুরে ১০০টি সাইক্লোন শেল্টার, ৬৬টি মেডিকেল টিম ও ২ হাজার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। নদী থেকে ফিরে আসছেন জেলেরা। কিন্তু সাইক্লোন শেল্টারে যেতে অনাগ্রহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের। তবে জেলার রামগতি ও কমলনগরে প্রায় দুই হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন বলে উপজেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে কমলনগরের মতিরহাট মেঘনা এলাকায় দেখা যায়, জেলেরা নদী থেকে কূলে ফিরেছেন। এ সময় নদীতে নৌকা ভাসতে তেমন দেখা যায়নি। নদীর কূলেই নৌকা ভেড়ানো ছিল।
জেলেরা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে যেসব জেলেরা নদীতে নেমেছে তারাই ফিরে আসছে। রাতের পর থেকে কেউ নদীতে যায়নি। তবে তারা নিজের বাড়ি-ঘরে থাকলেও সাইক্লোন শেল্টারে যাবে না।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগরের ১০০টি সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। মাইকিং করে উপকূলীয় এলাকায় সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে।
সবশেষ লক্ষ্মীপুরে ৯ নম্বর সতর্কবার্তা দেখানোর জন্য জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল থেকে জেলার সর্বত্র গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
রামগতি উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৪৮টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি খুলে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় এক হাজার ২৫০ জন মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। বাকিদেরকেও আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে জেলেদের নদীতে নামতে দেওয়া হয়নি। নদীতে থাকা জেলেরাও উঠে এসেছে। এছাড়া ১ হাজার ৫১৫ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছে।
কমলনগর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৫০টি সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার ১০০ জন মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে উঠেছে। উপকূলীয় এলাকায় সতর্কবার্তা দিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। নদী থেকে জেলেরা ডাঙায় উঠে এসেছে। সবাইকে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। এতে ৯৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত রয়েছে।
তবে কমলনগরের চর কালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছয়েফ উল্যাহ বলেন, অনেককে বোঝানোর পরও সাইক্লোন শেল্টারে যেতে কেউই রাজি হচ্ছে না। কয়েকজনকে জোর করে নেওয়া হলেও পরে তারা ফিরে এসেছে।
রামগতি উপজেলার চর আবদুল্যাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মঞ্জুর বলেন, ‘মেঘনার বিচ্ছিন্ন এই ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এখানকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে।'
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মোমিন ও কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন জানায়, সবশেষ তথ্য অনুযায়ী গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ছাড়া কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। লোকজন সাইক্লোন শেল্টারে আসতে শুরু করেছে। যে কোনো প্রয়োজনে উপজেলায় কন্ট্রোলরুম খোলা রয়েছে।