বগুড়ায় আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মাঠ থেকে সবজি উঠানোর পর থেকেই আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকই আবার সাথী ফসল হিসেবে কলার জমিতেও আলু বীজ বপন করছেন। তবে জেলার সব এলাকায় পুরোদমে আলু চাষ শুরু করতে আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। এ দিকে জেলার উত্তর পূর্ব অঞ্চলের কৃষকরা আগাম ফসল ঘরে তোলার জন্য দুই-তিন সপ্তাহ আগে থেকেই আলু চাষ শুরু করেছেন।
বগুড়া জেলার সব এলাকাতেই কম বেশি আলু চাষ হয়ে থাকে। কম খরচে অধিক ফলন পাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে আলু চাষের উপর ঝুঁকছেন এই জেলার কৃষকরা। আমন ধান কাটার পর অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে জমিতে আলু বীজ বপনের কাজ শুরু করেন কৃষক। কিন্তু ধান চাষ অলাভজনক ফসলে পরিণত হওয়ায় ধানের পরিবর্তে আগাম জাতের বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি আগাম আলু চাষ করেছেন কৃষকরা।
বগুড়ার জেলার সদর, শিবগঞ্জ, গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধানের চাষ কম। মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন ধরনের আগাম জাতের সবজি। একদিকে জমি থেকে সবজি তোলা হচ্ছে অন্য দিকে সেই জমিতেই আলু বীজ বপন করা হচ্ছে। আবার অনেকে দুই সপ্তাহ আগে থেকে আলু চাষ শুরু করেছেন। তবে কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে আগাম চাষ করা আলু জমির ক্ষতি হয়েছে। আগাম চাষ করা আলু পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহে বাজারে বিক্রি করে ভাল দাম পাওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।
শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝপাড়া গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন জানান, তিনি ৫০ শতাংশ জমিতে আগাম আলু চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন আলু ঘরে তুলবেন। ৫০ শতাংশ জমিতে কমপক্ষে ৫০ মণ আলু ঘরে তুলবেন বলে আশা করছেন।
জাবারীপুর গ্রামের হবিবর মন্ডল ২০ শতাংশ জমিতে কলা এবং আলু একসাথে চাষ করছেন। তিনি বলেন, কলা এবং আলু দুটোই লাভজনক ফসল। এ কারণে তারা ধান চাষ ছেড়ে দিয়েছেন।
এদিকে দেবীপুর গ্রামের হারুনার রশিদ বলেন, গত বছর আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি। এ কারণে এবারও আগাম ফুলকপি চাষ করে সেই জমিতে আবার আগাম আলু চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অতি বৃষ্টি না হলে এবারও আলুর বাম্পার ফলন হবে আশা করছেন জেলার কৃষকরা।
এ বিষয়ে বগুড়ার আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী আব্দুল আজিজ বার্তা টোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার ১২ উপজেলায় ৫৫ হাজার ৪৫৪ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আলু চাষের জমির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। এ বছর আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন।