ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ নামক স্থানে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ফারজানা। তিনি শহরের নাজিরপাড়া দেওয়ান বাড়ীর মোহন দেওয়ানের স্ত্রী। তাকে শেষবারের মতো দেখতে প্রবাস থেকে রওনা হয়েছেন বাবা বিল্লাল বেপারী। আদরের ছোট মেয়ের সাথে আর কথা হবে না। তবে প্রবাসী বাবার অনুরোধে মেয়ের মৃতদেহ দাফন করা হয়নি।
এদিকে, একই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ফারজানার মা বেবী বেগম (৪০), মামাতো ভাই ইউছুফ ওরফে জুবায়ের বেপারী (২৮), নানী ফিরোজা বেগম (৭০), মামী শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতু (১৭) ও ইলমা (৭)। তাদের সবাই এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, একটি জাঁকজমক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ক্লান্ত শরীর নিয়ে তারা সবাই ফিরছিলেন। ফেরার পথে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথার ধাক্কায় পুরো পরিবার ভেঙে চুরমার। কারো পা, কারো হাত, কারো কোমার ভেঙে গেছে। আবার কারো মাথায় কাঁচের টুকরা ঢুকে গেছে।
সিলেটের শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন থেকে লাকসাম রেল জংশনের উদ্দেশ্যে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেসে যাত্রা শুরু করে পুরো পরিবার। সেই যাত্রা ছত্রভঙ্গ হয়ে সঙ্গী এখন দুঃখ-যন্ত্রণাময় বাঁচার লড়াই।
নিহত ফারজানার পরিবারের সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য মুনাফ খাঁন বার্তাটোয়ান্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার সবাই সিলেটে ফারজানার খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। সেখান থেকে চাঁদপুরে ফেরার পথে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আহতদের মধ্যে ফারজানার নানী ফিরোজা বেগম (৭০), ভাই ইউছুফ ওরফে জুবায়ের বেপারী (২৮), মামী শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতুর (১৭) অবস্থা আশঙ্কাজনক।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোর ২টা ৫৬ মিনিটে কসবা উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে নিহত হন ১৬ যাত্রী। তাদের মধ্যে চাঁদপুর সদর ও হাজীগঞ্জ উপজেলার তিনজন রয়েছেন।