'এসএসসি পরীক্ষার ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ' শিরোনামে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে সাভার উপজেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান।
তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে কোনো সময় অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের রশিদসহ অভিযোগ করলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) 'এসএসসি পরীক্ষার ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ' শিরোনামে দুটি বিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ৩৭০ টাকা আদায়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সংবাদটি প্রকাশের পর এরকম অসংখ্য বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায়ের অভিযোগ আসে এই প্রতিবেদকের কাছে।
খোজঁ নিয়ে জানা যায়, সাভার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ভাটপাড়া হার্বাড স্কুলের মোট পরিক্ষার্থী ১১ জন। যেখানে টেস্ট পরীক্ষায় পাশ করেছে একজন। ফেল করা শিক্ষার্থীর মধ্যে যারা তিন বিষয়ে ফেল করেছে তাদের কাছ থেকে ফরম পূরণের জন্য নেওয়া হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০, দুই বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৫০০। এভাবে বাকি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষকগণ। এছাড়া সাভার মুক্তির মোড় এলাকায় নিউ ক্যামব্রীজ স্কুলে ৫০০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। সাভার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জ্ঞানবিকাশ স্কুলে বোর্ড ফির চেয়ে তিনগুন আদায়ের অভিযোগ আসে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের কাছে।
এব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ঈমাম বলেন, এভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের অকালেই ঝরে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। নির্ধারিত বোর্ড ফি বিভাগ অনুযায়ী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করলে অভিভাবকরা সচেতন ও উপকৃত হবেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করা বিদ্যালয় গুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাভার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুন্নাহার জানান, নির্ধারিত বোর্ড ফির অতিরিক্ত আদায় করা অপরাধ। তবে কেউ যদি অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে থাকে তাহলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এসময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের রশিদ ছাড়া কোনো টাকা পরিশোধ না করার পরামর্শ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৯ -২০ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরিক্ষার বোর্ড ফি ঘোষণা করা হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে ১ হাজার ৯৭০ টাকা, বানিজ্য বিভাগ ও মানবিক বিভাগে ১ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।