লাগাতার শ্রমিক ধর্মঘটের চতুর্থ দিনেও পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল বন্দরে। ফলে বন্দরে বর্তমানে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এতে ব্যবসায়ীদের যেমন লোকসান গুনতে হচ্ছে তেমনি রাজস্ব আয়েও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
অন্যদিকে, কাজ বন্ধ থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন বন্দর শ্রমিকেরাও। আর গন্তব্যে যেতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন ভারত ফেরত যাত্রীরা। তবে যানবাহন বন্ধ থাকায় ট্রেনে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।
ভারত ফেরত কয়েকজন যাত্রী জানান, অযৌক্তিক দাবি আদায়ের নামে শ্রমিকরা যাত্রীদের জিম্মি করছে। তারা কিভাবে গন্তব্যে পৌঁছাবেন, কোথায় থাকবেন- এসব দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। এরপরও নিরাপদ সড়ক আইন বাস্তবায়ন হোক।
অন্যদিকে ট্রাক শ্রমিকরা জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইন তাদের পক্ষে মানা সম্ভব না। আইনের ধারা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
বেনাপোলের সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাস চালকরা গাড়ি রেখে চলে গেছেন। আর গাড়ি ছাড়তে না পারায় যাত্রীরা কাউন্টার ও বিভিন্ন হোটেলে অপেক্ষা করছেন।’
বেনাপোল বন্দরের ট্যান্সসেক্রেটারি আজিম উদ্দীন গাজী বলেন, ‘ভারত থেকে আমদানি করা পণ্য বন্দরে আটকা পড়েছে। ফলে আমরা ব্যাপক লোকসানে পড়তে যাচ্ছি।’
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, ‘দেশের স্থলপথে আমদানি হওয়া পণ্যে ৭০ শতাংশ আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে।এসব পণ্যের মধ্যে শিল্পকারখানার প্রয়োজনীয় কাঁচামালসহ ওষুধ শিল্পের কাঁচামালও রয়েছে। লাগাতার ধর্মঘটে পণ্য পরিবহন করতে না পারায় লোকসান হচ্ছে। ব্যহত হচ্ছে শিল্প কারখানার উৎপাদনও।’
রাজস্ব আহরণকারী সোনালী ব্যাংকের বেনাপোল শাখার ম্যানেজার রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিক ধর্মঘট যদি দীর্ঘায়িত হয় তবে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
প্রসঙ্গত, সড়ক নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পরিবর্তনের দাবিতে গত ১৭ নভেম্বর সকাল থেকে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়। এতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্য পরিবহন ও বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায় সরকার। এ বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- শিল্পকারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, কেমিকেল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য। আর রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- পাট ও পাটজাত দ্রব্য এবং মাছ।