হলদে হয়ে যাওয়া কমোড, ভাঙা বেসিন, মেঝেতে জমা পানি ও কাদা, ভাঙা দরজা, অপর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও সংস্কারের অভাবে উৎকট গন্ধ পুরনো পাবলিক টয়লেটগুলোতে। এ ছাড়া নতুনভাবে যে কয়টি পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলোকে স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব বলা হলেও নেই স্যান্ডেল, পানি সরবরাহ, টয়লেট টিস্যু ও হ্যান্ডওয়াশ। মেরামতের অভাবে বিকল হয়ে রয়েছে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহকৃত পানির কলগুলোও।
(২১ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার যশোর পৌরসভার পুরাতন বাসস্থান, কালেক্টরেট মার্কেট, চাঁচড়া চেকপোস্ট, গোহাটা সড়ক, মাছ বাজার, ২৫০ শয্যা হাসপাতাল চত্বর, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ আটটি পাবলিক টয়লেটে সরেজমিনে ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
যশোর পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, যশোর পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে মোট জনসংখ্যা দুই লক্ষ ৮৬ হাজার ১শ’৬৩ জন। আবার প্রতিদিন এই শহরের নানান কাজে সন্ধানে আসেন প্রায় ২০-২৫ হাজার লোক। কিন্তু সকলের জন্য পাবলিক টয়লেট রয়েছে মাত্র আটটি। যা একেবারেই পর্যাপ্ত নয়।
এ দিকে প্রয়োজনের তুলনায় শহরে টয়লেট কম থাকায় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের। শহরে যত্রতত্র লোকজন মল-মূত্র ত্যাগ করে, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
হায়দার আলি নামে এক পথচারী জানান, শহরের পাবলিক টয়লেটগুলো রয়েছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। আবার দুর্গন্ধযুক্ত। বেশিরভাগ টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী।
তামান্না আক্তার নামে এক গৃহিণী জানান, নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত টয়লেট অধিকাংশ নারীরা ব্যবহার করেন না। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন মার্কেটের টয়লেট ব্যবহারে তারা বাধ্য হন। তিনি অভিযোগ করেন, এসব টয়লেটগুলো যারা রক্ষণাবেক্ষণ করেন তারা সঠিকভাবে পরিষ্কার করেন না।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও পরিষ্কার নগরী করার জন্য যশোর পৌরসভা কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু যশোর পৌরসভার পাবলিক টয়লেটগুলো নিজেরা পরিচালনা না করে বেসরকারি পর্যায়ে ইজারা দিয়ে রাখা হয়েছে। সঠিকভাবে ব্যবহারে ইজাদারদের অবহিত করা হবে। তিনি আরো বলেন, যশোরে পাবলিক টয়লেটের সঙ্কট রয়েছে। আরো কিছু বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদনের কাজ চলছে। প্রকল্পগুলোর অনুমোদন হলেই সঙ্কট দূর হবে।
এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.আবুল কালাম আজাদ লিটু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, পথচারীরা পর্যাপ্ত টয়লেট বা ব্যবহারের উপযোগী টয়লেট না পাওয়ায় টয়লেট ব্যবহার না করে মল-মূত্র আটকে রাখে। যেখানে-সেখানে মল-মূত্র ত্যাগ করা পরিবেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি মল-মূত্র আটকে রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মল-মূত্র আটকে রাখলে এটি মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় এবং এর ফলে মূত্রাশয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সংক্রমিত হয় মূত্রথলি, কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গ। আশা করি, যশোরে পাবলিক টয়লেট সংকট দূর হবে।