সৌদি আরবে প্রায় একমাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন নরসিংদীর বাসিন্দা ফয়সাল গাজী। নিখোঁজের খবরে দেশে নির্বাক বাবা-মা। সরকারের বিভিন্ন দফতরে দফতরে ঘুরেও ছেলের সন্ধানের কূলকিনারা করতে পারছেন না তারা।
নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের আব্দুর রহিম গাজী ও মরিয়ম বেগমের দ্বিতীয় ছেলে ফয়সাল গাজী। গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ফয়সালের বাবা রহিম গাজীর সঙ্গে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর কথা হয়। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ফয়সালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কেঁদে ফেলেন।
ফয়সালের বাব বলেন, ‘চার ছেলের মধ্যে ফয়সাল দ্বিতীয়। অনেক অভাব অনটনে দিন কাটছিল। তাই ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় প্রায় ১৫ থেকে ১৬ বছর আগে সৌদি যায় ফয়সাল। সৌদিতে প্রথম পর্যায়ে কিছুটা সমস্যা হলেও আস্তে আস্তে তা কাটিয়ে ওঠে। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর বাড়িতেও আসে। পুনরায় সৌদি ফিরে যায় ফয়সাল। এই যাওয়াই যেন তার শেষ যাওয়া। গত ২৭ অক্টোবর বিকেলে মদিনায় কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে নিখোঁজ হয় ফয়সাল।’
শুক্রবার রাতে ফয়সালের বড় ভাই কাওসার গাজী বলেন, ‘সৌদিতে ফয়সালের বন্ধুরা বিভিন্ন হাসপাতাল ও জেলাখানায় খবর নিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে কেউ কেউ নাকি বলেছেন সৌদির একটি গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় নিখোঁজ ফয়সালের মা মরিয়ম বেগম ১১ নভেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।’
জানা গেছে, বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) উপসচিব মো. জহিরুল ইসলাম গত ১২ নভেম্বর জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাউন্সিলর (শ্রম) আমিনুল ইসলামকে লিখিতভাবে নিখোঁজ ফয়সালের সন্ধানের জন্য দ্রুত কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন। কিন্তু আজও এ বিষয়ে কোনো কার্যকরী ফলাফল আসেনি। এতে নিখোঁজ ফয়সাল গাজীর মা-বাবসহ পরিবারের লোকজন উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।
নিখোঁজ ফয়সালের বড় ভাই কাউসার গাজী জানান, ভগ্নিপতি নাজিম উদ্দিন ও তার চাচা গত ৪ মার্চ ওমরাহ পালন করতে মদিনায় গিয়ে এক পাকিস্তানি গাড়ি চালকের ধাক্কায় মারা যান। এতে নিখোঁজ ফয়সাল দুর্ঘটনায় নিহত ভগ্নিপতি ও তার চাচার পক্ষে মামলা করেন। মামলায় পাকিস্তানি চালককে আটক করে সৌদি পুলিশ। মামলার শুনানিতেও একাধিকবার আদালতে হাজির হয়েছিলেন ফয়সাল। দুর্ঘটনায় নিহত পরিবার উক্ত মামলায় ফয়সালের মাধ্যমেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার কথা ছিল।