তাজরীন দুর্ঘটনার ৭ বছর পূর্তি ও ১১৩ জন নিহতের স্মরণে কারখানাটির সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন করেছেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় জরাজীর্ণ তাজরীন ফ্যাশনের সামনে এই মোমবাতি প্রজ্বলন করেন তারা। এ সময় ১১৩ জন নিহতের স্মরণে ১১৩ টি মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়।
এর আগে কারখানাটির সামনে এক পথসভা করেন শ্রমিক নেতারা। শ্রমিক নেতারা ৬ দফা দাবি জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা বিধানে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
দাবিগুলো হলো- তাজরিন ও রানা প্লাজাসহ সারাদেশের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভাইবোন ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আইএলও কনভেনশন ১২১ এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা আইন ১৮৫৫ -এর ভিত্তিতে শ্রমিকদের সারাজীবনের আয়ের ক্ষতির ভিত্তিতে ও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আদালতের আদেশে প্রদত্ত ক্ষতিপূরণের বিবেচনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। এ লক্ষ্যে ক্ষতিপূরণের একটি জাতীয় মানদণ্ড তৈরি করতে হবে।
আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
নির্মাণ, রাসায়নিক ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্রসমূহ পরিদর্শনে দেশব্যাপী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বা ঝটিকা পরিদর্শন ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং সবার জন্য নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে পরিদর্শন ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে।
পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ ইউনিট ও বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সকল শ্রমিককে বিমার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
কর্মক্ষেত্রের সকল দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িত দায়ীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে দুর্ঘটনার অবহেলাজনিত বা অন্যান্য সকল কারণ নির্ণয় করতে হবে এবং তদন্ত রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
শ্রমিকসহ সকল মানুষের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় সংস্কৃতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।
মোমবাতি প্রজ্বলনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি), বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা।