পুরাতন জেএমবির রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দাওয়াতি প্রধানসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পিস্তল, গুলি, ধারালো অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জামাদি।
রোববার(২৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বগুড়ার পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাত ১টায় বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে শিবগঞ্জ থানার পাকুড়তলা এলাকায় গোপন বৈঠক থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন পুরাতন জেএমবির রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দাওয়াতি প্রধান আতাউর রহমান ওরফে হারুন ওরফে আরাফাত(৩৪), বায়তুল মাল প্রধান নওগাঁ জেলার দায়িত্বশীল সিজানুর রহমান ওরফে নাহিদ ওরফে মোরছাল (৪২), গাইবান্ধা জেলার দায়িত্বশীল জহুরুল ইসলাম সিদ্দিক (২৭) এবং বগুড়া জেলার দায়িত্বশীল মিজানুর রহমান(২৪)।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে পাকুড়তলা বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের পূর্বপার্শ্বে জেএমবির গোপন বৈঠকের সংবাদ পাওয়া যায়। এরপর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখা ও বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। এসময় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। আরো দুই তিনজন পালিয়ে যায়। পরে তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় ১টি পিস্তল,৩ রাউন্ড গুলি, ২টি চাপাতি, ১টি চাকু, ১কেজি বিস্ফোরক, ৮টি গ্রেনেড বডি ও গ্রেনেড তৈরির অন্যান্য সরঞ্জাম।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতারকৃত আতাউর রহমান রংপুর জেলার কাউনিয়া থানার বেটুবাড়ি গ্রামের করিম সরকারের ছেলে। ২০১৩ সালে জেএমবিতে যোগ দিয়ে রংপুর বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সাল থেকে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে দাওয়াতি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি ২০১২ সালে ডিগ্রী পাশ করে কাউনিয়া উপজেলার খোতাপী উচ্চ বিদ্যালয়ে ল্যাব সহকারী পদে কর্মজীবন শুরু করেন।
মিজানুর রহমান নাহিদ নওগাঁ জেলার পোরশা থানার কাশিতাড়া গ্রামের গোলাম মোহাম্মদের ছেলে। ২০০৪ সালে জেএমবিতে যোগ দিয়ে নওগাঁ জেলার দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বায়তুল মাল প্রধানের দায়িত্ব গ্রহন করেন।
জহুরুল ইসলাম ওরফে সিদ্দিক গাইবান্ধা জেলার রামচন্দ্রপুর সোনারপাড়া গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে। ঢাকায় একটি সুয়েটার কোম্পানিতে চাকরি করাকালীন জেএমবিতে যোগ দেন এবং গাইবান্ধা জেলায় দাওয়াতি কাজ শুরু করেন। ২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে রংপুর ও রাজশাহী বিভগের বায়তুল মাল প্রধান ও নওগাঁ জেলার দায়িত্বশীল মিজানুর রহমান নাহিদের মেয়ে আয়শা সিদ্দিকীকে ঢাকায় বিয়ে করেন। ২০১৭ সাল থেকে তিনি গাইবান্ধা জেলার দাওয়াতি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ছদ্মবেশে ডিম, পেপার বিক্রি করে দাওয়াতি কার্যক্রম চালাতেন।
মিজানুর রহমান বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে। ২০১৬ সালে পুরাতন জেএমবিতে যোগদান করে ২০১৭ সালের প্রথম দিক থেকে বগুড়া জেলায় দাওয়াতি কার্যক্রম শুরু করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতারকৃতদের নামে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।