২১ শিক্ষার্থী আর ৪ সহকারী শিক্ষক নিয়ে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পূর্ব ভাউমহল প্রাথমিক বিদ্যালয়টির সরকারিকরণ হলো।
স্থানীয়রা বলছেন, বিদ্যালয়টির একটি টিনশেড ঘর থাকলেও পাঠদানের জন্য নেই কোন পৃথক শ্রেণীকক্ষ। ২১ জন শিক্ষার্থীর জন্য নেই পর্যাপ্ত বেঞ্চ। এমনকি হাজিরা খাতা অনুযায়ী ডাকা হয় না শিক্ষার্থীদের নাম। শিক্ষকরাও মানছেন না হাজিরা আর রেজিস্ট্রার খাতা। কাগজে কলমে ৪ জন শিক্ষক থাকলেও তারা যার যার সময় মতো স্কুলে আসা-যাওয়া করেন। কেউ আবার সপ্তাহে একবার আসছেন স্কুলে ।
জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে পূর্ব ভাউমহল প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে স্থানীয়রা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। কোন নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন উপায়ে ৪ জন শিক্ষককে নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ৭ অক্টোবর এই কমিউনিটি বিদ্যালয়টির সরকারিকরণ হয়। এর পাশাপাশি ৪ জন সহকারী শিক্ষকেও জাতীয়করণ করা হয়।
মো. হালিম নামে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বার্তা২৪.কম-কে জানান, কাছাকাছি স্কুল না থাকায় বাধ্য হয়ে ওই স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করছি। স্কুলে পড়াশুনা না হওয়ার কারণে ছেলে বাসায় বসে প্রাইভেট পড়ে শুধু স্কুলের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নারগিছ ইয়াসমিন বার্তা২৪.কম-কে জানান, স্কুলের আশপাশে জনবসতি কম হওয়ায় এখানে অন্য বিদ্যালয়ের তুলনায় শিক্ষার্থী কম। তবে সরকারি করার পর আগামী জানুয়ারি থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক কহিনুর বেগম বার্তা২৪.কম-কে জানান, এখন থেকে শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে শিক্ষকদের স্কুল ফাঁকি আর অবহেলার বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে পূর্ব ভাউমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি মো. মোতালেব গাজী বার্তা২৪.কম কে জানান, স্কুলটি কয়েকমাস আগে সরকারিকরণ করা হয়েছে। তবে আগে বেতন ভাতা ছাড়া শিক্ষকরা নিজেদের ইচ্ছামত পাঠদান চালিয়েছে। তবে এখন থেকে বিধি মোতাবেক নিয়মিত ক্লাস চালু করা হবে এবং অভিভাবক সমাবশ করে শিক্ষার্থী বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে নলছিটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল বার্তা২৪.কম-কে জানান, কম শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও কীভাবে স্কুলটি জাতীয়করণ হলো, বিষয়টি নিয়ে বিস্মিত তিনি। পরে ওই বিদ্যালয়ের ক্লাস্টার অনিতা রানীকে বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করতে বলা হয়।
তদন্ত শেষে জানা যায়, বিদ্যালয়ে মাত্র ২১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষকদের নানা অনিয়ম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।