গাইবান্ধা শহরের কাচারী বাজারের পুরাতন জজ কোর্ট চত্বর ও টেনিস ক্লাবে শুরু হয়েছে লেপ-তোষক তৈরির ধুম। সেখানে দম ফেলার ফুরসত নেই আব্দুস সোবাহান মিয়ার।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) কাচারী বাজারে গিয়ে দেখা যায় নতুন লেপ-তোষক কিনতে আসা মানুষের আনাগোনা।
দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ধুনকরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন পঞ্চাশ বছর বয়সী আব্দুস সোবাহান। বার্তা২৪.কমকে তিনি জানান, এ কাজ করে যে অর্থ উপার্জন করেন তা দিয়েই তার পরিবারের ভরণ-পোষণ চলে। স্ত্রীসহ ৪ সদস্যের পরিবার আব্দুস সোবাহানের।
তিনি বলেন, লেপ-তোষক তৈরিতে গার্মেন্টেসের ঝুটের তুলা ও কার্পাস তুলা ব্যবহার করি। ভালো মানের তুলা দিয়ে একটি সিঙ্গেল লেপ তৈরি করতে মজুরি, কাপড়, তুলাসহ লাগে ১ হাজার টাকা। মাঝারি মানের তুলায় কভারসহ লাগে ১২শ’ টাকা। ৪/৫ হাত মাপের সাইজের লেপ তৈরি করতে ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা খরচ হয়।
কার্পাস তুলা দিয়ে একটি লেপ তৈরি করতে ৪/৫ কেজি তুলা দরকার হয়। প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম ১৩০ টাকা। আর মজুরি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। গার্মেন্টসের তুলা দিয়ে ৫ থেকে ৭ ফুটের একটি তোষক তৈরি করতে খরচ হয় ৮৫০ টাকা। ৬ থেকে ৭ ফুট সাইজের একটি তোষক তৈরি করতে লাগে ১২শ’ টাকা। এতে ১২ থেকে ১৪ কেজি তুলা প্রয়োজন পড়ে বলে জানান ধুনকর সোবাহান।
তুলা ছাড়াও লেপ তৈরিতে প্রয়োজন পড়ে সুতা ও কাপড়। প্রতি কেজি তুলা ৩০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর মজুরি লাগে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। দিনে ৩ থেকে ৪টি লেপ-তোষক তৈরি করেন আব্দুস সোবাহান। এ থেকে দিনে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা আয় করেন তিনি।
লেপ কিনতে আসা আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সোবাহান মিয়ার দক্ষ হাতের বানানো লেপ-তোষক সবার নজর কাড়ে। ফলে শীতকালে এলাকার মানুষ লেপ-তোষক কিনতে তার কাছেই ভিড় জমান।
ধুনকর আব্দুস সোবাহান মিয়া বলেন, সারা বছর তেমন একটা ব্যবসা হয় না। পুরো বছরের ব্যবসা শীতের এই তিন চার মাসে করতে হয়। শীতের সময় ছাড়া বিয়েসাদিতে লেপ-তোষক বিক্রি।