শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রায় ৬ মাসের বেতন বকেয়া রেখেই বন্ধ ঘোষণা করে দেয়া হয়েছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পাল্ব ও ক্যাপিটাল পেপার মিল।
গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) মিলের গেইটে লে-অফ ঘোষণার বিজ্ঞপ্তিটি টানানো হয়। মিলের ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) স্বদীপ কুমার মজুমদার স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এবং মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে কারখানাটি ২ ডিসেম্বর থেকে আগামী জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত ৩২ দিনের জন্য কারখানাটি লে-অফ ঘোষণা করা হয়।
এ দিকে কারখানা বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে এবং শ্রমিক কর্মচারীরা বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে মিলের ডিজিএমের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, গত ১২ আগস্ট ঈদের ছুটিতে মিলের উৎপাদন বন্ধ করার পর মিলের উৎপাদন পুনরায় চালু করেনি মিল কর্তৃপক্ষ। বিগত ৬ মাস ধরে বেতন ভাতা না দিয়ে মিল কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে ৪ ডিসেম্বর মিলটি বন্ধ ঘোষণার নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। কারখানায় কর্মরত প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বিগত ৬ মাস যাবত বেতন ভাতা না পেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
মিলের শ্রমিক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বেতন না পেয়ে সাধারণ শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অতি কষ্টে দিন পার করছেন। এ ছাড়া বহু শ্রমিক বাধ্য হয়ে পেটের দায়ে রিক্সা, ভ্যান চালিয়ে তাদের সংসারের খরচ মেটাচ্ছেন।
মিলের অপর কর্মচারী সালাউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, শ্রমিকদের বিগত ছয় মাসের বেতন ও আট মাসের ওভার টাইম পরিশোধ না করেই হঠাৎ মিলের উৎপাদন বিগত ৬ মাস আগে বন্ধ করে দেয়া হয়। অবশেষে ৪ ডিসেম্বর বন্ধের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ।
কারখানার একটি সূত্র জানিয়েছে, ১ শত ৪ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যাপিটাল পেপার এন্ড পাল্ব ও ক্যাপিটাল বোর্ডের ২টি গ্যাস সংযোগ ছিল। প্রায় ৭ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় তিতাস কর্তৃপক্ষ একটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে জুলাই মাসে এবং অপরটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আগস্ট মাসে। বর্তমানে দুটির সংযোগই বিচ্ছিন্ন থাকায় বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে স্থানীয় ডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সাবের-উল-হাই উদ্বেগ জানিয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কারখানার শ্রমিকদের কঠিন সমস্যায় ফেলে কারখানাটি বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ না করে বন্ধ ঘোষণা অযৌক্তিক।
কারখানার উপ মহা ব্যবস্থাপক মীর আলী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মাত্র এক মাসের জন্য মিল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মিলের গ্যাস সংযোগ দুটি পেলেই পুনরায় মিলটি চালুর চিন্তা ভাবনা রয়েছে।