নীলফামারীতে প্রতিদিনই কমছে নতুন আলুর দাম। বেশি লাভের আশায় তাই সময়ের আগেই আলু তোলার ধুম পড়েছে। এসব আলু ট্রাকযোগে ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে।
জেলা সদর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একদিকে চলছে আলু উত্তোলনের কাজ, অন্যদিকে কেউ কেউ আলু লাগানোর কাজে ব্যস্ত, আবার কেউবা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নীলফামারীতে প্রায় ২৫ দিন আগে থেকে আলু উঠতে শুরু করেছে। প্রথমদিকে ৪৮ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে আলু বিক্রি হলেও এখন তা ২৬ টাকায় নেমেছে।
নীলফামারী-কিশোরগঞ্জ সড়কের জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া এলাকায় দেখা গেছে, দল বেঁধে নারী-পুরুষ ও শিশুরা আলু তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যদিকে জমির পাশে আলু ওজন করে বস্তায় ভরছেন ব্যবসায়ীরা।
আলু ক্ষেতের মালিক জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের খালিশা খুটামারা গ্রামের নুরুজ্জামান (৩৫) বলেন, ‘আমি ৪ বিঘা জমিতে এ বছর আলু চাষ করেছি। আলুর বয়স এখন ৫৫ দিন হয়েছে। আরও ১০ দিন পরে আলু তুলতে হতো। কিন্তু দাম পড়ে যাচ্ছে। তাই আগে ভাগে তুলছি।’
তিনি বলেন, ‘দুইদিন আগে দেড় বিঘা জমির আলু তুলে ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। ওই আলু একদিনের ব্যবধানে ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতিদিন দাম পড়ে যাচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা এবং প্রতি বিঘায় এক হাজার ৩০০ কেজি করে ফলন হয়েছে। এতে আমার লাভ হবে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় ২০ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। রোপণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জানান, ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫২৭ হেক্টর জমির আলু উঠেছে। ফলন হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৯ দশমিক ৮৭ মেট্রিক টন।
তিনি আরও জানান, বাজারে দাম বেশি থাকায় লাভের আশায় অনেকে বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই আলু তুলছেন। ওই জমিতে তারা আবারো আলু লাগাচ্ছেন।