মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলের শ্রমিকরা। এ আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে ২০ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে ১১ জনকে হাসপাতালে ও অন্যদের অনশনস্থলেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
অসুস্থ হয়ে পড়া শ্রমিকদের মধ্যে নরসিংদী সদর ও ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তিকৃতরা হলেন মো. ফুয়াদ, মো সফিউদ্দিন, মো. কামাল হোসেন, মো. আব্দুর রব, মো. রুবেল, মো. আলী আকবর, রাজিয়া বেগম, চাঁন মিয়া, সামসুল হক, বিল্লাল হোসেন ও আলী হোসেন।
নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নরসিংদীর সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম মোল্লা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অনশনের ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, রাতভর শীত উপেক্ষা করে কাঁথা বালিশসহ অনশন স্থলে অবস্থান করছেন শতশত পাটকল শ্রমিক। আজ সকালেও দেখা গেছে শীত উপেক্ষা করে ঘুমিয়ে আছেন আন্দোলনরত শ্রমিকরা। একটানা অনশনের ফলে বয়স্ক শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের অনশনস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা হচ্ছে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া শ্রমিকদের হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা। আমরণ অনশনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে জুটমিলে। মিলের উৎপাদনবন্ধ হওয়াসহ প্রবেশ করতে পারছেন না পাটবোঝাই কোনো ট্রাক। প্রবেশ করতে পারছেন না জুটমিলের কর্মকর্তারাও।
অনশনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে গত দুইদিন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় অনশনস্থল পরিদর্শন করেছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর নরসিংদী কার্যালয়ের উপ-মহাপরিদর্শক মো. আতিকুর রহমান। এসময় তিনি শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে কাজে যোগদানের অনুরোধ করেন এবং হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ শ্রমিকদের খোঁজ খবর নেন।
মো. আতিকুর রহমান জানান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মজুরি কমিশনসহ শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি বিবেচনায় আছেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালাবে বলে জানান।
আমরণ অনশন কর্মসূচিতে শ্রমিক নেতারা জানান, ২০১৫ সালে ঘোষণা দিয়েও মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন শ্রমিকরা। মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, ১১ সপ্তাহের বকেয়া বেতন পরিশোধ, পিএফর টাকা প্রদান, বদলি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণসহ ১১ দফা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি। এ জন্য বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিকরা।